টিকা কিনতে বড় অংকের অর্থ দেবে বিশ্বব্যাংক : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
কোভিডের পরবর্তী ঢেউ মোকাবিলায় ভ্যাকসিন কিনতে বাংলাদেশকে বড় অংকের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এমন তথ্য জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের দুটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিশ্বের পঞ্চম সফল দেশ হিসেবে বিশ্ব স্বীকৃতি পেয়েছে এবং দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম অবস্থানে রয়েছে। এই সাফল্য গোটা বিশ্বের পাশাপাশি বিশ্বব্যাংকেরও নজর কেড়েছে। একদিনে সোয়া এক কোটি ডোজ টিকা দিয়ে বাংলাদেশ নিজেদের সক্ষমতা তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। এসব কারণে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের ভ্যাকসিন ক্রয়ে বড় অংকের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘কোভিড সাফল্যের কারণে, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের অন্যান্য জরুরি চিকিৎসাসেবা খাতেও সহযোগিতা করতে উৎসাহিত হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের এই আর্থিক উদ্দীপনা নিঃসন্দেহে দেশের স্বাস্থ্যখাতের জন্য একটি বড় ইতিবাচক দিক।’
আজ বুধবার টেলিফোনে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির বিশ্বব্যাংকের সদর দপ্তরে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেকের নেতৃত্বে দেশের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের দুটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের দুটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের উচ্চ পর্যায়ের দুটি প্রতিনিধি পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক দুটিতে বাংলাদেশের চতুর্থ স্বাস্থ্য জনসংখ্যা, পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি বাস্তবায়নে অগ্রগতি, পঞ্চম স্বাস্থ্য জনসংখ্যা পুষ্টি কর্মসূচি গ্রহণ, কোভিড মহামারি মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত কর্মসূচি আলোচনা হয়।
প্রতিনিধি দলের সাথে প্রথম সভায় বিশ্বব্যাংকের হেলথ পপুলেশন ও নিউট্রিশন বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট মমতা মূর্তির নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসময় উল্লেখ করেন, ‘এই বৈঠকে কোভিড ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য বড় অংকের আর্থিক অনুদান প্রাপ্তির আশ্বাস পাওয়া গেছে। বৈঠকে চলমান চতুর্থ এইচপিএনএসপি’র বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ নিয়ে অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক আরও বলেন, ‘এই বৈঠকে ৫ম স্বাস্থ্য জনসংখ্যা পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি গ্রহণের বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে এবং এই খাতের বিশ্বব্যাংকের নিকট হতে কমবেশি এক বিলিয়ন ডলার আর্থিক সহযোগিতার বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। ঢাকায় সাউথ এশিয়া অঞ্চলের রিজিওনাল সার্ভিলেন্স সেন্টার স্থাপন বিষয়েও ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।’
দ্বিতীয় সভায় বিশ্বব্যাংকের ডিরেক্টর জুয়ান পাবলো চলমান কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিশ্বে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে উল্লেখ করে এমন সফলতা কীভাবে ঘটলো সে বিষয়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে জানার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে কোভিড মোকাবিলায় বাংলাদেশে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন।
সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক মো. শফিউল আলম উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে অন্যান্যদের মধ্যে স্বাস্থ্যশিক্ষা বিভাগের সচিব সাইফুল হাসান বাদল, স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম এনায়েত হোসেন, যুগ্মসচিব আব্দুস ছালাম খানসহ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।