ট্রাকসহ গায়েব আতপ চাল রংপুর থেকে জব্দ, গ্রেপ্তার ২
নওগাঁ থেকে ১৩ হাজার কেজি সুগন্ধি আতপ চাল আত্মসাত করেন এক প্রতারক চালক। এর দুই সপ্তাহ পর রংপুরের গঙ্গাচড়া থেকে চালগুলো জব্দ করে মহাদেবপুর থানা পুলিশ। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার প্রতারক চক্রের মূল হোতাসহ দুজনকে আটক করা হয়েছে।
মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজম উদ্দিন মাহমুদ জানান, গত ১৮ এপ্রিল এসিআই ফুডস লিমিটেডের ১৩ হাজার কেজি সুগন্ধি আতপ চাল নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ বাজারে আব্দুল্লাহ স্টোরে সরবরাহ করতে মহাদেবপুর ভাই ভাই ট্রান্সপোর্টকে একটি ট্রাক ভাড়া করার অনুরোধ জানান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ভাই ভাই ট্রান্সপোর্ট ওই দিন ঢাকা আশুলিয়া বেরিবাঁধ এলাকার স্বপন নামের একজন চালককে ট্রাক নিয়ে এসিআই ফুডস লিমিটেডে পাঠায়। চালক দুপুর ২টার দিকে ১৩ হাজার কেজি চিনিগুঁড়া চাল নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জের উদ্দেশে রওনা দেন। কিন্তু ওই চালগুলো সময়মতো মোকামে না পৌঁছায় এবং চালক ও হেলপারের দেওয়া মোবাইল নম্বরগুলো বন্ধ থাকায় সন্দেহের সৃষ্টি হয়। পরে ২১ এপ্রিল ভাই ভাই ট্রান্সপোর্টের পক্ষে সুশান্ত কুমার চক্রবর্তী এবং এসিআই ফুডসের পক্ষে স্থানীয় ম্যানেজার এমএ সাত্তার পৃথক পৃথকভাবে মহাদেবপুর থানায় দুটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরবর্তী সময়ে বিষয়টি মহদেবপুর থানায় মামলা হিসেবে লিপিবদ্ধ করা হয়।
খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে ট্রাকের চালক ও হেলপারের দেওয়া ঠিকানা ভুয়া বলে প্রমাণিত হয়। পুলিশ তদন্তের এক পর্যায়ে বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলাধীন সদর হাসরা গ্রামের সাবেক মেম্বার মো. হেলাল উদ্দিন মণ্ডলের সম্পৃক্ততা থাকার সম্ভাবনা খুঁজে পান।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সুপার প্রকৌশলী মো. আব্দুল মান্নান মিয়ার সার্বক্ষণিক নির্দেশনায় এবং মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজম উদ্দিন মাহমুদের তত্ত্বাবধানে সংগীয় ফোর্সসহ গতকাল দুপুরে চক্রের মূল হোতা হেলাল মণ্ডলকে বগুড়ার শেরপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া স্বীকারোক্তি মোতাবেক গতকাল রাতেই রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলা সদরের মেসার্স নাইম ট্রেডার্স থেকে নয় হাজার কেজি চাল জব্দ করা হয়। সেইসঙ্গে মেসার্স নাইম ট্রেডার্সের ম্যানেজার লেবু মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। জব্দকৃত চালসহ আটককৃতদের মহাদেবপুর থানায় নিয়ে আসা হয়। মামলার পর তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।
মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজম উদ্দিন মাহমুদ জানান, এটি একটি প্রতারক চক্রের কাজ। আটক হেলাল উদ্দিন মণ্ডল এই চক্রের মূল হোতা। তাঁর বিরুদ্ধে বগুড়ার শেরপুর, ধুনট ও ঠাকুরগাঁও সদর থানায় চুরি, ডাকাতি এবং প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগে ছয়টি মামলা রয়েছে।