ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দিন : রাষ্ট্রপতি
ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল জনগণের কাছে ফলপ্রসূভাবে পৌঁছে দিতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ অনুকরণের পরিবর্তে উদ্ভাবনে মনোযোগী হওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি বলেন, ‘প্রযু্ক্তি হচ্ছে উন্নয়নের বাহন। তথ্যপ্রযুক্তি হচ্ছে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল জনগণের কাছে ফলপ্রসূভাবে পৌঁছে দিতে হলে আমাদেরকে নতুন ও পরিবর্তিত প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।’
আজ শনিবার চতুর্থ ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি। তিনি এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের অডিটোরিয়ামে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস’ এর কর্মসূচির উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির ফলে সৃষ্ট সব সুযোগকে যথাযথভাবে কাজে লাগানোর পাশাপাশি এর অপব্যবহার রোধে সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। বুদ্ধিমত্তা ও নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার সক্ষমতার দিক থেকে আমাদের যুবসমাজ যথেষ্ট দক্ষ ও উদ্যোগী। তাই তাদেরকে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া গেলে এরাই দেশকে উন্নয়নের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে দেবে।
দেশের বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমাদের দেশে প্রাইভেট সেক্টর এখন যথেষ্ট শক্তিশালী ও বিস্তৃত। তাই আমি আশা করব, সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাত তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।’
মহামারির মধ্যেও ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস পালনের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘মুজিব শতবর্ষে দাঁড়িয়ে আমাদের একইসঙ্গে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। দুনিয়া বদলে দেওয়া করোনা মহামারি মোকাবিলার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে সরকার নিরলস প্রয়াস চালাচ্ছে।’
তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে করোনা মহামাররি এই কঠিন সময়ে দূরে থেকেও আমরা পরস্পর সংযুক্ত থাকতে পারছি এবং গ্রাম-শহরের দূরত্ব কমে আসছে বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রপতি।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কল্যাণে নেওয়া সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবাষির্কী ও আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর একটা যুগসন্ধিক্ষণ হচ্ছে ২০২১ সাল।’ তিনি আরো বলেন, এই যুগসন্ধিক্ষণে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গঠনে আমাদের নিরলস প্রয়াস চালাতে হবে।’
আশা প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গঠনে সফলতার পথ ধরে আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গঠনের পথে আরো সাহস ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে যেতে পারবো।
অনুষ্ঠানে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নে অবদান রাখার জন্য ১৫ জন ব্যক্তি, দল ও সংস্থাকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। শেষে শিশু শিল্পীদের একটি নাটকের ভিডিও অনুষ্ঠানে প্রদর্শন করা হয়।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম বক্তব্য দেন।
২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) দিবস হিসাবে পালন করা হয়েছিল। এরপর গত বছরের ২৬ নভেম্বর মন্ত্রিপরিষদ দিনটির নাম পরিবর্তন করে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস’ রাখে।
এবারের ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসের প্রতিপাদ্য করা হয়েছে ‘যদিও মানছি দূরত্ব, তবুও আছি সংযুক্ত’।