ডিজিটাল রূপান্তরের অভিযাত্রা সহজ ছিল না : মোস্তাফা জব্বার
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটালাইজেশন যে একটি দেশের অভাবনীয় রূপান্তর ঘটাতে পারে, বাংলাদেশ তার প্রমাণ। এনালগ থেকে ডিজিটাল রূপান্তরের অভিযাত্রা খুব সহজ ছিল না। ১৯৯৬ সালের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশে কম্পিউটার এবং মোবাইল ফোন সাধারণ মানুষের কাছে সহজলভ্য হয় এবং এরই ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল শিল্প বিপ্লবের ভিত্তি স্থাপিত হয়। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি এনালগ যুগ থেকে ডিজিটাল যুগে উত্তরণের এই বিপ্লব এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
ঢাকায় একটি হোটেলে আইসিটি পাইওনিয়ার ক্লাব আয়োজিত ‘ডিজিটাল বিপ্লব ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও আব্দুল্লাহ এইচ কাফি রচিত ‘আবর্ত এনালগ থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ ও আমরা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সাবেক অ্যাসোসিও সভাপতি আব্দুল্লাহ এইচ কাফির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যামসুন্দর সিকদার, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সাবেক সভাপতি এস এম কামাল, বেসিস-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এ তৌহিদ, একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু, সাংবাদিক মুনির হাসান ও পল্লব মোহাইমেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
ডিজিটাল সংযুক্তির ক্ষেত্রে বিস্ময়কর অগ্রগতি অর্জন করেছে বাংলাদেশ উল্লেখ করে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী বলেন, ২০২৩ সালের মধ্যে দেশের শতভাগ এলাকায় উচ্চগতির ইন্টারনেট পৌঁছে যাবে। ইন্টারনেট মূল্য সহজলভ্য করতে একদেশ এক রেট চালু করা হয়েছে। ২০০৮ সালে প্রতি এমবিপিএস ইন্টারনেটের মূল্য ছিল ২৭ হাজার টাকা। আমরা কার্যত তা মাত্র ৬০ টাকায় নামিয়ে এনেছি।
মোস্তাফা জব্বার আরও বলেন, কম্পিউটারের ওপর থেকে ভ্যাট ট্যাক্স প্রত্যাহার, মোবাইলের মনোপলি বন্ধে ৪টি মোবাইল অপারেটরকে লাইসেন্স প্রদান, ভি-স্যাটের মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ, জেআরসি কমিটি গঠন এবং গঠিত কমিটির রিপোর্ট বাস্তবায়ন ও মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সময়ে ডিজিটাল বাংলাদেশের ভিত্তি স্থাপন স্থাপন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৮ সালে তারই ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির হাত ধরে বাংলাদেশ ডিজিটাল প্রযুক্তি দুনিয়ায় উন্নত দেশের সাথে সমানতালে চলার সক্ষমতা অর্জন করেছে।
মন্ত্রী তার বক্তব্যে লেখক আব্দুল্লাহ এইচ কাফির বইটিকে দেশের ডিজিটাল শিল্পবিপ্লবের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, আজকের প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা দেশের কম্পিউটার বিপ্লব সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাবে এবং নিজেদেরকে তৈরি করার জন্য অনুপ্রাণিত হবে।
১৯৮০ সালে কম্পিউটার প্রশিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করা লেখক আব্দুল্লাহ এইচ কাফি তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, অসংখ্য বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে হাতেগোনা কয়েকজন মানুষ দেশের তথ্যপ্রযুক্তি ইন্ডাস্ট্রি বিকাশের ভিতটি গড়ে দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশের ডিজিটাল প্রযুক্তি খাতকে এক অসাধারণ উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা যখন তরুণ ছিলাম আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল প্রযুক্তিখাতে এই জায়গায় উপণীত হবে তা কল্পনাও করতে পারিনি।
বইটিতে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের নায়কদেরকেই তুলে এনেছেন বলে তিনি জানান।
বক্তারা বলেন, ১৯৬৪ সালে ঢাকায় কম্পিউটার আসে। কিন্তু আশির দশকের আগ পর্যন্ত কম্পিউটারের ব্যবহার ছিল না বললেই চলে। এই অবস্থাটা বিশদভাবে লেখক আবর্তে তুলে এনেছেন যা নতুন প্রজন্মের জন্য প্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।