ডিবি অফিসে দেখা করে যা বললেন ফারদিনের বাবা
‘আমার ছেলে হত্যার শিকার হয়েছে। আর মামলাটা কী? এসব কিছু বলে মামলাকেই পাল্টে দিয়েছেন। আগাম কথাবার্তা বলা উচিত নয়।’ আজ বৃহস্পতিবার ডিবি কার্যালয়ে ছেলে হত্যার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে গণমাধ্যমে র্যাব কর্মকর্তার বরাতে উঠে আসা তথ্যের পরিপ্রেক্ষিতে এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন ফারদিন নূর পরশের বাবা কাজী নূরউদ্দিন রানা।
কাজী নূরউদ্দিন রানা বলেন, ‘রায়হান গ্যাঙের সঙ্গে আমার ছেলেটার কী নিয়ে বিরোধ থাকবে? বুঝলাম সে (রায়হান) একটা খারাপ মানুষ। কিন্তু আমাকে বোঝান আমার ছেলেটাই কেন তার টার্গেটে পড়বে? সে কেন ওখানে (চনপাড়ায়) যাবে? কীভাবে সম্ভব সেটা! কোন তথ্যের ভিত্তিতে দেখাবেন সেখানে আমার ছেলেটা মুভিং করছে? সে যদি সেখানে না থেকে থাকে তাহলে এসব বলার অর্থ কী?’
ফারদিন হত্যা মামলায় কোনো মোটিভ তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে নূর উদ্দিন রানা বলেন, ‘না, আমাকে সে রকম কিছুই জানানো হয়নি। তারা (ডিবি) আমাকে ডেকেছে, ছেলের পড়াশোনা, বয়স, মাদকে জড়ানোর বিষয়ে জানতে চেয়েছে। সে মুক্তমনা ছিল কি না, যেসব জায়গায় গেছে সেসব জায়গায় অন্য কোনো বন্ধু রয়েছে কি না, এসব বিষয় জানতে চেয়েছে।’
মাদকের সঙ্গে জড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে রানা বলেন, ‘মাদকে জড়ানোর বিষয়ে ডিবি কিছুই বলেনি আমাকে। মাদকে সংশ্লিষ্টতাও পাওয়া যায়নি, সেটা ডিবি পুলিশ ক্লিয়ার করেছে। আমিও এর আগে বলেছি। আমার ছেলে কখনো ধূমপান করত না। এমনকি ধোঁয়াও সহ্য করতে পারত না।’
আপনি মামলার বাদী, ছেলে হারিয়েছেন কিন্তু তদন্ত সংশ্লিষ্ট সবাই নিশ্চিত করেছেন ফারদিন হত্যায় বান্ধবী বুশরা জড়িত নয়। বুশরার জন্য আপনার খারাপ লাগা আছে কি না?
এমন প্রশ্নের জবাবে রানা বলেন, ‘বুশরার জন্য প্রচণ্ড রকমের খারাপ লাগা তো আছেই। কিন্তু বুশরার সঙ্গে ফারদিনের পাঁচ-ছয় ঘণ্টা কাটানোর কথা নয়। এই মেয়েও এতটা সময় কাটানোর কথা নয়। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারছি না বুশরা জড়িত নয়।’
এক প্রশ্নের জবাবে বাবা নূরউদ্দিন রানা বলেন, ‘র্যাব থেকে তথ্য সংগ্রহের জন্য আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। তবে মামলা দায়েরের পর থেকে তারা কোনো আপডেট দেয়নি। এই যে ম্যাসেজটা দিল, কারা দিল, কোন সংস্থা দিল, তা আপনারা জানেন। বিচারাধীন বিষয়ে এমন তথ্য দেওয়াটা কতেটা যথাযথ? ওখানে যে ফুটেজ দেখানো হলো। রায়হান গ্যাঙের সঙ্গে আমার ছেলেটার কী বিরোধ থাকবে?’
এদিকে র্যাবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী রায়হান গ্যাং ফারদিন হত্যার নেপথ্যে কাজ করেছে। আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রায়হানসহ বেশ কয়েকজনকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডে কারা জড়িত তাদের আমরা প্রায় শনাক্ত করতে পেরেছি। চনপাড়ার আশপাশে হত্যাকাণ্ডটি ঘটানো হতে পারে। আমরা অনেকটাই নিশ্চিত যে চনপাড়ার রায়হান গ্যাঙের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। রায়হানকে যদি আমরা আইনের আওতায় আনতে পারি তাহলে ফারদিন হত্যার মোটিভ বের করতে পারব।’