ড. কামাল হোসেনকে আমন্ত্রণ জানালে প্রাণবন্ত ও সুন্দর হতো : মোকাব্বির খান
জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে সুবর্ণ জয়ন্তীর সংসদ অধিবেশনে গত ৭ এপ্রিল (শুক্রবার) ড. কামাল হোসেনকে আমন্ত্রণ না জানানোর জন্য সরকারের প্রতি কিছুটা উষ্মা প্রকাশ করেছেন গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান।
আজ রোববার (৯ এপ্রিল) জাতীয় সংসদে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু সভাপতিত্ব করছিলেন।
মোকাব্বির খান বলেন, ‘ড. কামাল হোসেন বঙ্গবন্ধুর সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও পালন করেছিলেন। কিন্তু আজ সেই জাতীয় সংসদের সুবর্ণ জয়ন্তীতে গণপরিষদের সদস্য তিনিসহ অন্যান্য যারা আছেন তাদের যদি আমন্ত্রণ জানানো হতো, তাদের যদি স্মৃতিচারণের সুযোগ দেওয়া হতো তাহলে সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত ও সুন্দর হতো। কেননা ১৯৭৩ সালের ৭ এপ্রিল ড. কামাল হোসেন প্রণীত সংবিধান অনুযায়ী বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এই সংসদের পদযাত্রা শুরু হয়।’
এ সময় তিনি বিভিন্ন সরকারের আমলে মহান সংবিধান কাটা-ছেঁড়ার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
মোকাব্বির খান বলেন, ‘ড. কামাল বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সহচর, গণপরিষদের সদস্য, তৎকালীন মন্ত্রী ছিলেন। যাকে বঙ্গবন্ধু সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা কমিটির চেয়ারম্যান করেছিলেন। অতি অল্প সময়ে তিনি বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান বাংলাদেশকে উপহার দিয়েছিলেন।’
মোকাব্বির খান ইভিএম থেকে সরে আসায় বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানান। তিনি নির্বাচন কমিশনকে জাতির সামনে অঙ্গীকার করার আহ্বান জানিয়ে বলেন ‘ইসিকে জাতির কাছে আশ্বস্ত করতে হবে মহান সংবিধানের আলোকে সব রাজনৈতিক শক্তির প্রভাবকে উপেক্ষা করে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেবে। জাতি একটা সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়।’
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে মোকাব্বির খান বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের মতো হত্যাকাণ্ড বিশ্বের ইতিহাসে আর একটা আছে কিনা তা সন্দেহ। কিন্তু দুর্নীতিবাজ লুটেরা, অর্থ পাচারকারীদের জন্য আজও এই সংসদে ইনডেমনিটির মতো কালো আইন পাস হয়।’
মোকাব্বির খান বলেন, ‘কিছু বিষয়কে আমাদের বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখতে হবে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান, সংসদ, জাতীয় সংগীত এগুলো নিয়ে প্রশ্ন তুললে ত্রিশ লাখ শহীদের প্রতি বিশ্বাস ঘাতকতা করা হবে। জাতি হিসেবে আমরা চরমভাবে লজ্জিত হব। কিন্তু ১৯৭৫ সালের পরে যেসব সরকার দেশ পরিচালিত করেছে তারা কিন্তু একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে পারেনি। কখনো হা-না ভোট, কখনো আগের রাতে ভোট হয়।’