ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে কী পদক্ষেপ জানতে চান হাইকোর্ট
আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী রোববার পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের উত্তর জানাতে হবে।
বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) এ আদেশ দেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের আইনজীবী আমাতুল করিমকে উদ্দেশ্য করে আদালত বলেন, নির্দেশনা বাস্তবায়নে বার বার আপনাদের ডাকতে হয়। আমরা নিজেরাই লজ্জা পাচ্ছি। পরিবেশ দূষণ রোধে কী পদক্ষেপ নিয়েছেন তা আগামী ৫ জানুয়ারি (রোববার) জানাবেন।
রিটের পক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন চেয়ে আমরা একটি আবেদন করেছিলাম। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত পরিবেশ অধিদপ্তর, সিটি করপোরেশনসহ সব পক্ষের কাছে জানতে চেয়েছেন। আদালত বলেন- বার বার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। বায়ু দূষণ রোধে আপনারা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। আপনারা কি আমাদের সবার ক্ষতি করতে চান?’
ঢাকার বায়ু দূষণ রোধে উচ্চ আদালতের যে নয় দফা নির্দেশনা রয়েছে তা বাস্তবায়নের নির্দেশনা চেয়ে গতকাল হাইকোর্টে আবেদন করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তিনি বলেন, আপনারা জানেন কয়েকদিন ধরে রিপোর্ট হচ্ছে- বিশ্বের সর্বোচ্চ বায়ু দূষণকারী শহর হচ্ছে ঢাকা। বায়ু দূষণে ঢাকার এই অবস্থান ধারাবাহিকভাবে একইরকম হচ্ছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। এটি যদি অব্যাহত থাকে তাহলে যেন জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়। যেটা দিল্লিতে করা হয়েছিল। কিন্তু আমাদের এখানে কারো কোনো খবর নেই। এখন পর্যন্ত ঢাকা শহর বায়ু দূষণে এক নম্বরে আছে অথচ কেউ কোনো পাত্তা দিচ্ছেন না। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত এ বিষয়ে বলে যাচ্ছেন।
এর আগে ২০২০ সালে বায়ু দূষণ রোধে ৯ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দিয়েছিলেন উচ্চ আদালত।
নয় দফা নির্দেশনায় বলা হয়-
১. ঢাকা শহরের মধ্যে বালি বা মাটি বহনকারী ট্রাকগুলোকে ঢেকে পরিবহণ করতে হবে।
২. যেসব জায়গায় নির্মাণকাজ চলছে সেসব জায়গার কনট্রাকটররা তা ঢেকে রাখবেন।
৩. ঢাকার সড়কগুলোতে পানি ছিটানোর নির্দেশ ছিল, এখনো পানি ছিটানো হচ্ছে না, সব সড়কে পানি ছিটানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪. সড়কের মেগাপ্রজেক্টের নির্মাণ কাজ এবং কার্পেটিংসহ যেসব কাজ চলছে, সেসব কাজ যেন আইনকানুন এবং চুক্তির টার্মস এন্ড কন্ডিশন মেনে করা হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
৫. যেসব গাড়ি কালো ধোঁয়া ছাড়ে সেগুলোকে জব্দ করতে হবে।
৬. সড়ক পরিবহণ আইন-২০১৮ অনুযায়ী রাস্তায় চলাচলকারী গাড়ির ইকোনমিক লাইফ নির্ধারণ করতে হবে এবং যেসব গাড়ি পুরাতন হয়ে গেছে সেগুলো চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।
৭. যেসব ইটভাটা লাইসেন্সবিহীন চলছে, এর মধ্যে যেগুলো এখনো বন্ধ করা হয়নি, সেগুলো বন্ধ করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়।
৮.পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া টায়ার পোড়ানো এবং ব্যাটারি রিসাইক্লিং বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।
৯.মার্কেট ও দোকানের বর্জ্য প্যাকেট করে রাখতে হবে। এরপর মার্কেট ও দোকান বন্ধ হলে সিটি করপোরেশনকে ওই বর্জ্য অপসারণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।