ঢাকায় আক্রান্তদের ৬৮ ভাগই ‘ভারতীয় ধরন’ : আইসিডিডিআরবি
আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) এক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, রাজধানীতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে ৬৮ শতাংশের দেহে ‘ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট’ (ভারতীয় ধরন) পাওয়া গেছে।
আইসিডিডিআরবির জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী ও ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান ড. মোস্তাফিজুর রহমান ঢাকায় করোনা রোগীদের জিনোম সিকোয়েন্সিং করে এই ফলাফল পেয়েছেন।
আইসিডিডিআরবির গণমাধ্যম শাখার ব্যবস্থাপক তারিফুল ইসলাম খান আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানিয়ে বলেছেন, গত মে মাসের শেষ ও জুন মাসের প্রথম— দুই সপ্তাহে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে মোট ৬০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। জিনোম সিকোয়েন্সিং করে ৬০ জনের মধ্যে ৪১ জনের শরীরেই ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। এরপর বেশি পাওয়া গেছে বিটা ভ্যারিয়েন্ট (দক্ষিণ আফ্রিকান ধরন)। বাকিগুলো অন্যান্য ধরনের।
‘ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট’-এর করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকার কিছুদিন আগে থেকেই ভারতীয় সীমান্ত সংলগ্ন বেশিরভাগ জেলায় লকডাউন ঘোষণা করে। কোনো কোনো জেলায় একাধিকবার লকডাউন বাড়ানো হয়েছে। তারপরেও করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।
আইসিডিডিআরবির করা এই গবেষণায় ঢাকায় এই ভাইরাস বিস্তারের তথ্য ওঠে আসায় দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা করছেন সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী ড. মোস্তাফিজুর রহমান।
এরই মধ্যে এই ধরনটি (বি.১.৬১৭.২) অতি সংক্রামক হয়ে উঠায় একে ‘বিশ্বের উদ্বেগ’হিসেবে উল্লেখ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। ভারতের মহামারিতে বিপর্যস্ত হওয়ার জন্য এই ধরনটিকে দায়ী করা হচ্ছে।
দেশে গত ৮ মে প্রথম ‘ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট’ শনাক্ত হয়। পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর পরই মে মাসের মাঝামাঝি থেকে ভারতীয় সীমান্তবর্তী ১৫টি জেলায় রোগী দ্রুত বাড়তে শুরু করে। গত কিছুদিন ধরে সারা দেশেই রোগী বাড়তে শুরু করেছে।
সবশেষ নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৩ হাজার ৩৪৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া দেশে নতুন করে আরও তিন হাজার ৮৪০ জন আক্রান্ত হয়েছে। দেশে মোট আট লাখ ৪১ হাজার ৮৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।
এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছে দুই হাজার ৭১৪ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সাত লাখ ৭৬ হাজার ৪৬৬ জন করোনা থেকে সুস্থ হলো বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে।