ঢাকা শুধু বাসযোগ্য নয়, দৃষ্টিনন্দন বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হবে : এলজিআরডি মন্ত্রী
রাজধানীর খালগুলো দখলমুক্ত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে হাতিরঝিলের আদলে নির্মাণ করলে ঢাকা শুধু বাসযোগ্য নয় দৃষ্টিনন্দন ও বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন (এলজিআরডি) ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
রাজধানীর একটি হোটেলে আজ শনিবার ঢাকা ওয়াসার সহায়তায় বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রণীতব্য ‘মেঘনা নদীর মাস্টারপ্ল্যান’ শীর্ষক এক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা জানান তাজুল ইসলাম।
মেঘনা নদীকে দখল, দূষণ ও নাব্যতা সংকট থেকে রক্ষা করতে একটি মহাপরিকল্পনা নিতে এই মাস্টারপ্ল্যান, যা বাস্তবায়নে খরচ ধরা হয়েছে ১১ কোটি চার লাখ টাকা। প্রকল্পটির মেয়াদ ১৮ মাস।
এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, ‘ওয়াসা থেকে দুই সিটি করপোরেশনকে ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা ও খালের দায়িত্ব দেওয়ার পরেই দুই মেয়র অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে দিয়েছেন এবং কার্যক্রম চলমান আছে। খালগুলোতে ও নদীর দুই ধারে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে পরিকল্পিতভাবে ঢাকাকে শুধু বাসযোগ্যই নয়, আধুনিক, দৃষ্টিনন্দন ও বিনোদন কেন্দ্রে রূপান্তরিত করা হবে।’
ঢাকার চারপাশের নদীগুলোকে দখলমুক্ত, দূষণরোধ ও নাব্যতা বৃদ্ধির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে কাজ চলছে উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, পদ্মা, বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, বালু ও চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী নিয়ে একটি মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে এবং সেই অনুযায়ী কাজ চলছে। এছাড়াও সরকার তুরাগসহ ঢাকার অদূরে বেশ কিছু নতুন শহর গড়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে জানান তিনি।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘মানুষের আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোগ বেড়েছে। আর এ কারণেই ময়লা-আবর্জনার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। নদ-নদী ও খালগুলোয় বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য নিষ্কাশন হওয়ার ফলে পানি দূষিত হয়ে যাচ্ছে, যা আমাদের জন্য খুবই উদ্বেগের বিষয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘মেঘনা নদীর পানি দূষণমুক্ত রাখার লক্ষ্যে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের জন্য আজকের এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান।’
মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নে উন্নয়ন সহযোগীদের আর্থিক সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে মন্ত্রী আশাপ্রকাশ করে বলেন, ‘সবার সমন্বিত উদ্যোগে আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।’
মন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীন করার পর নদীরক্ষাসহ অনেক জাতীয় কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন। নদীপথ ব্যবহার করেই বিভিন্ন অঞ্চলে মানুষের চলাচলের পাশাপাশি পণ্য আনা নেওয়া করা হতো।’
সমবায়মন্ত্রী আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ এক সময় পিছিয়ে থাকলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত দূরদর্শী ও গতিশীল নেতৃত্বের কারণে দেশ এখন অর্থনৈতিকভাবে শক্ত অবস্থানে পৌঁছেছে। দেশ এরই মধ্যে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে আগেই উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তরিত হবে।’
স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও প্রকৌশলী তাকসিম এ খান, স্থানীয় সরকার বিভাগ, ওয়াসা ও ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিংয়ের (আইডব্লিউএম) কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।