তৃতীয় সন্তানও মেয়ে হওয়ায় নবজাতককে ডোবায় ফেলে হত্যা!
পর পর তিনটি কন্যা সন্তান হওয়ায় এক নবজাতককে ডোবার পানিতে ফেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার রাতে বরগুনার আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের গোজখালী গ্রামে নির্মম এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় নিহত শিশুকন্যা জিদনীর বাবা জাহাঙ্গীর সিকদারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে নবজাতক শিশুকন্যা জিদনীকে ঘরে শুয়ে রেখে মা সীমা বেগম ও নানি পারুল বেগম ঘরের বাইরে চাল ঝাড়ছিলেন। এক ফাঁকে সীমা বেগম ঘরে উঁকি দিয়ে দেখেন বিছানা ফাঁকা। এরপর শুরু হয় জিদনির খোঁজ। কয়েক মিনিটের পরই ঘরের পেছনের ডোবায় ভাসমান জিদনিকে পাওয়া যায়। পাশে ভাসছিল জিদনির ছোট্ট কাঁথাও।
জিদনীর হত্যাকারী কে তা নিশ্চিত হওয়া না গেলেও স্বজনদের ধারণা তৃতীয় এই কন্যাসন্তানকে মেনে নিতে পারেননি জাহাঙ্গীর সিকদার।
জাহাঙ্গীর সিকদার ও সীমা দম্পতির সোহাগী (৯) ও জান্নাতী (৩) নামে আরো দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে। গত ৮ ডিসেম্বর জন্ম নেওয়া তৃতীয় কন্যা শিশু জিদনী।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ময়না বেগম জানান, জাহাঙ্গীরের আশা ছিল তৃতীয় সন্তানটি ছেলে হবে। কিন্তু মেয়ে হওয়ায় তিনি বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি। রাগে স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলাও বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এমনকি জিদনীকে তিনি নতুন কোনো কাপড়ও কিনে দেননি।
শিশুটির মা সীমা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘তৃতীয় সন্তান মেয়ে হওয়ায় আমার স্বামী খুশি হতে পারেননি।’
আমতলী থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা মনোরঞ্জন মিস্ত্রী এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় শিশুটির মা সীমা বেগম বাদী হয়ে আমতলী থানায় অজ্ঞাতনামাকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। শিশুটির ময়নাতদন্ত শেষে তার গ্রামের বাড়িতেই দাফন করা হয়েছে।