থানচিতে চলছে পাহাড় কাটার উৎসব
বান্দরবানের থানচি উপজেলায় নির্বিচারে পাহাড় কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি থোয়াইহ্লা মং মারমার বিরুদ্ধে। পরিবেশ অধিদপ্তর এবং প্রশাসনের কোনো ধরনের অনুমোদন ছাড়াই থানচি সদর ইউনিয়ন এলাকায় তিন সপ্তাহ ধরে প্রকাশ্যে পাহাড় কাটলেও তাঁর বিরুদ্ধে এখনও নেওয়া হয়নি কোনো আইনি ব্যবস্থা।
স্থানীয়দের অভিযোগ পেয়ে সরজেমিনে ঘটনাস্থল ঘুরে দেখা গেছে, থানচি উপজেলা বাসস্টেশন থেকে আমতলীপাড়া যাওয়ার রাস্তার পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় বসতবাড়ি নির্মাণের জন্য দুটি স্কেভেটর ব্যবহার করে পাহাড় কাটা হচ্ছে। ইতোমধ্যে পাহাড় কেটে অনেকটা সাবাড় করা হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তর এবং প্রশাসনের কোনো ধরনের অনুমোদন ছাড়াই উন্নয়ন কাজের অজুহাতে পাহাড়টি কাটা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কয়েক নেতা অভিযোগ করে বলেন, থোয়াইহ্লা মং মারমা এক সময় পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন। বর্তমানে তিনি থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। নিজের জায়গায় লোপাটের টাকায় বাড়ি বানাতে পরিবেশ ধ্বংস করে কাটা হচ্ছে বিশাল পাহাড়। আইনের কোনো তোয়াক্কা করছেন না। প্রকাশ্যে এস্কেভেটর দিয়ে পাহাড় কেটে পাহাড়ের মাটিগুলো চড়া দামে ইটভাটায় ও জমি ভরাটের জন্য বিক্রি করে মোটা অঙ্কের টাকা আয় করছেন তিনি।
পাহাড় কাটার বিষয়টি প্রতিবেদককে স্বীকার করে থোয়াইহ্লা মং মারমা বলেন, ‘কোনো ধরনের পরিবেশ ধ্বংস বা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক কাজের সঙ্গে আমি জড়িত না। পাহাড় কাটছি নিজের জায়গায় একটি বসতবাড়ি বানানোর জন্য। উন্নয়ন কাজের জন্য পাহাড় কাটা তো অপরাধ নয়। পাহাড় কেটে আমিতো মাটি বিক্রি করছি না। আমার থাকার কোনো ঘর নেই, তাই বাড়ি বানাতে নিজের জায়গায় পাহাড় কাটতে হচ্ছে।’
বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক আবদুস সালাম বলেন, ‘থানচিতে পাহাড় কাটার বিষয়টি আমি শুনেছি। দুই একদিনের মধ্যে থানচিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাহাড় কাটার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো ছাড়পত্র নেওয়া হয়নি।’
এ বিষয়ে থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আতাউল গণি ওসমানী জানান, পাহাড় কাটার কোনো নিয়ম নেই। পাহাড় কাটা আইনগত শাস্তিযোগ্য অপরাধ। পাহাড় কাটার বিষয়টি গণমাধ্যম কর্মীদের কাছ থেকেই শুনেছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’