থানায় ডেকে যৌন হয়রানি, এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা
প্রতিবেশীর সঙ্গে বিরোধের জেরে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন এক গৃহবধূ। সেই ডায়েরি তদন্তের নামে থানায় ডেকে যৌন হয়রানির অভিযোগে পুলিশের উপপরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। ঘটনাটি আজ সোমবার জানাজানি হয়।
নালিশি মামলায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বিরুদ্ধেও অসহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়। বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় এই ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে গত ২৪ মে বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নালিশি মামলা করেন হয়রানির শিকার নারী। মামলা নম্বর ১২৮/২০২১।
মামলা আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বরিশালকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু শামীম আজাদ।
তবে এক সপ্তাহ পর বিষয়টি জানাজানির বিষয়ে বাদী বলেন, পুলিশের চাপে এত দিন কাউকে জানাতে পারেননি।
বাদীর আইনজীবী আসাদুজ্জামান হাওলাদার জানিয়েছেন, মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মামলার আর্জিতে উল্লেখ করা হয়েছে, নগরীর বাসিন্দা ওই গৃহবধূ গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর কোতোয়ালি মডেল থানায় প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে একটি জিডি করেন। তা তদন্তের দায়িত্ব পান কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই আসাদুল ইসলাম। তিনি জিডি তদন্তের জন্য বাদীকে থানায় ডেকে আনেন।
২০২০ সালের ১৬ অক্টোবর বাদী থানায় গেলে এসআই আসাদুল নানান অজুহাতে তার রুমে বাদীকে বসিয়ে রাখেন। এরপর দস্তখত গ্রহণের অজুহাতে তিনি বাদীর শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেন এবং ঘাড়ে চুমু দেন। এর প্রতিবাদ জানালে এসআই বাদীকে জোর করে জড়িয়ে ধরেন এবং বিয়ে করার প্রস্তাব দেন। বাদীর স্বামী এ সময় এসে পড়লে এসআই আসাদুল ওই নারীকে ছেড়ে দেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, এ ঘটনার পর পরই বাদী বিষয়টি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে মৌখিকভাবে জানালে তিনি ঘটনার বিষয়ে বিচার করবেন বলে আশ্বস্ত করেন। ওসি তখন জানান অভিযোগের বিষয়ে একজন নারী এএসআই তদন্ত করবেন। যৌন হয়রানির শিকার নারী ওই এএসআইয়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলে জানতে পারেন তিনি কিছুই জানেন না। ওসি মূলত কালক্ষেপণ করতে চাইছিলেন বলে মামলার আর্জিতে উল্লেখ করেন বাদী।
সেই সঙ্গে থানায় লিখিত এজাহার দিতে চাইলে তা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান ওসি। মামলায় থানার সিসিটিভি ক্যামেরা পর্যালোচনা করলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যাবে বলেও বাদী উল্লেখ করেছেন। কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি নুরুল ইসলাম বলেছে, মামলার বিষয়টি অভ্যন্তরীণভাবে আমরাও খতিয়ে দেখছি।
মামলার বিষয়ে অভিযুক্ত এসআই আসাদুল ইসলাম বলেন, মামলার তদন্তে যাওয়ায় মিথ্যা অভিযোগে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
পিবিআইয়ের বরিশাল জেলার পুলিশ সুপার হুমায়ূন কবির জানান, এখন পর্যন্ত এমন কোনো মামলা পিবিআইতে এসে পৌঁছেনি। মামলার দায়িত্ব পেলে যথাযথ তদন্ত করা হবে।