দশ মাসে পাচার থেকে উদ্ধার আড়াই হাজার ভুক্তভোগী
মানবপাচার রোধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করছে সরকার। পাশাপাশি উদ্ধার করা হচ্ছে পাচারের শিকার মানুষ। এরই মধ্যে গত দশ মাসে উদ্ধার করা হয়েছে আড়াই হাজার জন। এক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার। তৈরি করা হচ্ছে সচেতনতা, রিপোর্টিং। বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে পাচারকারীদের। শুধু দেশেই নয়, বিদেশে বাংলাদেশিদের পাচার ঠেকাতে চালু করা হয়েছে পরিষেবা অ্যাপ।
আজ শনিবার দুপুরে এক অনুষ্ঠানে খোদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এসব তথ্য জানিয়েছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘বিদেশে আমাদের মিশনগুলো সচেতনা সৃষ্টিতে কাজ করে যাচ্ছে। প্রবাসী কর্মীরা যেন পাচারকারীদের খপ্পড়ে না পড়ে, সেখানে এসব বিষয় তুলে ধরা হচ্ছে। আমরা দেশে এবং বিদেশে কনস্যুলার এবং কল্যাণ পরিষেবা দিতে একটি গতিশীল মোবাইল অ্যাপ দূতাবাস চালু করেছি। জরুরি সহায়তার ক্ষেত্রে, নাগরিকরা তিন সেকেন্ডের জন্য এসওএস বোতাম চেপে ধরে রাখলে জরুরি সহায়তার অনুরোধ তার পূর্ব-নিবন্ধিত তথ্য বাংলাদেশ মিশনে চলে যাবে।’
‘প্রতিটি মিশনে ২৪ ঘণ্টার জন্য হটলাইন চালু রয়েছে’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশে যে কোনো পাচারের ঘটনা ঘটলে হটলাইনের মাধ্যমেও জানানো যাবে। দেশে এমন ঘটনা ঘটলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে না গিয়েও তথ্য সহজেই জানানো যাবে।’ জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করলে তাত্ক্ষণিকভাবে সাড়া দেওয়া হয়, বলেও জানান মন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিদেশে মিশন এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে এবং পাচারের শিকার ব্যক্তিদের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখে। আইসিটির কারণে আমরা স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আরও ভালো এবং দ্রুত সমন্বয় করতে পারি এবং উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করতে পারি। এমনকি, প্রতিটি ঘটনায় বিবেচনায় যদি ভুক্তভোগী দুর্গম অঞ্চলে থাকে, তাকেও জরুরি সহায়তা, যেমন—চিকিৎসা, খাবার এবং বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়।’
মোমেন বলেন, ‘২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে আমরা পাচারের শিকার আড়াই হাজার ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছি। প্রযুক্তি আইন-শৃঙ্খল রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য মানবপাচাকারীদের ওপর নজরদারি সহজ করে দিয়েছে। অপরাধীদের শনাক্ত ও আটক সহায়ক হয়েছে। তাদের বিচারের আওতায় আনাও সহজ হয়েছে। বাংলাদেশ মানবপাচারে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি অবলম্বন করছে। মানবপাচার রোধে সরকারের আন্তরিক তৎপরতা ২০২০ ও ২০২১ সালের মার্কিন প্রতিবেদনের প্রশংসিত হয়েছে।’
‘প্রযুক্তি বন্দুকের মতো; এটা যদি অপরাধী ও হত্যাকারীর হাতে থাকে, ইস্যু ভয়ঙ্কর হতে পারে’ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এরই মধ্যে মানবপাচার রোধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিস্তৃতভাবে চারটি বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে—সচেতনতা তৈরি, রিপোর্টিং, উদ্ধার ও পাচারকারীদের বিচার।’
মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার, বিশেষত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিদেশে আমাদের মিশনগুলো এই চারটি ক্ষেত্রে সক্রিয়ভাবে নিয়োজিত রয়েছে। সচেতনতা শুধুমাত্র সুশীল সমাজের নেতাদের মধ্যে নয়, জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য আমাদের উদ্যোগ রয়েছে।’