দস্যুতা ছেড়ে আত্মসমর্পণ করলে চাকরির আশ্বাস পুলিশ সুপারের
বাগেরহাট জেলা পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক বলেছেন, নতুন বন ও জলদস্যুরা আত্মসমর্পণ করলে তাদেরকে বেসরকারি ও সন্তানদের সরকারি (পুলিশ কনস্টেবল) চাকরি দেওয়া হবে। দস্যু ধরে জেলে দেওয়ার থেকে ভুল সংশোধনের সুযোগ দিয়ে ভালো করাতেই সার্থকতা।
আজ শনিবার দুপুরে মোংলার দিগরাজ বাজারে সুন্দরবনের মৎস্য, কাঁকড়া শিকারি, জেলে ও আত্মসমর্পণকৃত দস্যুদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে মতবিনিময় সভায় পুলিশ সুপার প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
এসপি আরিফুল বলেন, ‘আত্মসমর্পণকৃত সাবেক দস্যুদের মধ্যে কেউ কেউ এবং তাদের সঙ্গে নতুন অনেকে সুন্দরবনে অপতৎপরতা চালাচ্ছেন। তাদের জন্য পরিষ্কার ম্যাসেজ হলো—অপরাধী যেই হোক না কেন, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। যেকোনো মূল্যে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। আর যার পরিণতিও হবে ভয়াবহ।’
এসপি বলেন, ‘যেসব বন ও জলদস্যু নতুন করে ভুল পথে পা বাড়িয়েছেন, তারা যদি আত্মসমর্পণ করতে চান, তাহলে তাদেরকে আবারও সুযোগ দেওয়া হবে। তাদেরকে বেসরকারি ও তাদের ছেলে-মেয়েদেরকে সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করা হবে। কারণ, কাউকে ধরে জেলে দেওয়ার চাইতে তার ভুল সংশোধনের জন্য সুযোগ দিলে যদি সে ভালো হয়, সেটাই মূলত সার্থকতা।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘দাদন ও মহাজন ব্যবসা বেআইনি। যারা এই ব্যবসা করেন, তারাও সতর্ক ও ভালো পথে চলে আসেন। যারা দাদন দেন এবং মহাজনী করেন, তারাই দস্যুদের লালনপালন ও আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে থাকেন। এ নিয়েও কাজ করছে পুলিশ।’ তিনি এসব ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
মতবিনিময় সভায় বননির্ভর জনগোষ্ঠী তাদের বক্তব্যে বনবিভাগের হয়রানি, চাঁদাবাজি ও নৈরাজ্যের কথা তুলে ধরলে তা বনবিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে নিরসনের আশ্বাস দেন জেলা পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক।
মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বাগেরহাট জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. আসাদুজ্জামান, মোংলা উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার, পৌর মেয়র বীরমুক্তিযোদ্ধা শেখ আ. রহমান, মোংলা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আসিফ ইকবাল, রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, বুড়িরডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান উদয়শংকর বিশ্বাস প্রমুখ।
মতবিনিময় সভা শেষে সুন্দরবন নির্ভরশীল জেলে ও আত্মসমর্পণকৃত দস্যু পরিবারের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়।