দুই বছর পর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের লাশ উত্তোলন
মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের জন্য প্রায় দুই বছর পর আদালতের নির্দেশে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার গজেন্দ্র গ্রামে সমাহিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নীরু রায়হানের লাশ উত্তোলন করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গতকাল সোমবার দুপুরে লাশটি উত্তোলন করা হয়।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, গজেন্দ্র গ্রামের নিরঞ্জন শীল নীরু একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় সৈয়দা শাহিনা আক্তার নামের এক এনজিও কর্মকর্তাকে বিয়ে করেন। এ সময় তিনি ধর্মান্তরিত হয়ে নাম পরিবর্তন করে রাখেন নীরু রায়হান। এরপর তাঁদের সংসারে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়।
বিয়ের পর থেকে নীরুর সঙ্গে তাঁর পরিবারের লোকজনদের সম্পর্কের অবনতি হয়। বাড়ির জমি নিয়ে ভাইদের সঙ্গে একাধিকবার সালিশ বৈঠকও হয়। এর মধ্যে জমি বিক্রি করার জন্য ২০১৯ সালের ২১ এপ্রিল বাড়িতে অবস্থান করছিলেন নীরু রায়হান। ওইদিন বিকেলেই রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয় তাঁর।
তবে নীরুর স্ত্রী শাহিনা আক্তার চাকরির সুবাদে ওই সময় চট্টগ্রামে থাকায় তাঁকে না জানিয়ে তড়িঘড়ি করে লাশ দাফন করা হয়। পরে ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর শাহিনা আক্তার বাদী হয়ে নীরু রায়হানকে হত্যার অভিযোগে বরিশাল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় আসামি করা হয়, নীরুর পরিবারের সদস্য মনোরঞ্জন শীল মনো, সুশান্ত শীল শান্ত, বিমল চন্দ্র শীল, অঞ্জন শীল, অমল চন্দ্র শীল, কনা রানী শীল, অর্পিতা রানী টুম্পা ও মিথুন দীপ জয়কে।
নিরু রায়হানকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে জড়িতদের বিচার এবং সম্পত্তি ফিরে পাওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্ত্রী শাহিনা আক্তার। এই দাবিতে বরিশালে সংবাদ সম্মেলনও করেছেন তিনি। তবে নীরুর পরিবারের দাবি, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান জানান, আদালতের নির্দেশে তাঁরা লাশ উত্তোলন করেছেন। ফরেনসিক প্রতিবেদনের জন্য লাশটি বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।