দেশের মানুষ গণতন্ত্র হত্যাকারীদের আর ভোট দেবে না : মোশাররফ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘আজকে যারা গায়ের জোরে ক্ষমতায় রয়েছে তারা জিয়াউর রহমানকে, জিয়ার পরিবারকে এবং তাঁর প্রতিষ্ঠিত দলকে ভয় পায়। যার কারণে আমাদের ডাক দেওয়া গণসমাবেশকেও ভয় পায়। আমাদেরকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচি করতে দিতে চায় না। আওয়ামী লীগের অবস্থান বিএনপির বিরুদ্ধে নয়, জনগণের বিরুদ্ধে। এদেশের মানুষ আওয়াজ তুলেছে, তারা গণতন্ত্র হত্যাকারীদের আর ভোট দেবে না।’
জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় আজ শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মোশাররফ হোসেন এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বাংলাদেশ ও গণতন্ত্র’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ।
মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘যারা দেশের অর্থনীতিকে লুটপাট করে বিদেশে টাকা পাচার করে ধ্বংস করে দিয়েছে, তারা অর্থনীতিকে আর মেরামত করতে পারবে না। যারা দেশের বিচার ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ধ্বংস করেছে, তারা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে পারবে না।’
পেশাজীবীদেরকে সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আপনাদের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং অবদানের মাধ্যমে দেশের জনগণের প্রত্যাশা এ সরকারকে বিদায় করে বিএনপির রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফা রূপরেখার ভিত্তিতে বাংলাদেশ নির্মাণ করতে হবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে সরকারকে বিদায় করার কোনো বিকল্প নেই। বিদায় করার জন্য আমরা ১০ দফা কর্মসূচি দিয়েছি। একটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ যাতে গঠিত হয়, সেজন্য রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে ২৭ দফা ঘোষণা করা হয়েছে।’
মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেক বড় বড় নেতা রয়েছে যার প্রশংসা করতে করতে বর্তমান সরকার পাগল হয়ে যায়। কিন্তু যদি জিজ্ঞেস করেন যে নেতার জন্য এত বন্দনা তার সর্বশেষ রাজনৈতিক দর্শন কি? গণতন্ত্র হত্যা, বাকশাল প্রতিষ্ঠা। অস্বীকার করতে পারবে? পদ্মা সেতু তৈরি ও যমুনা সেতু তৈরি হয়েছে, এটা নাকি তার স্বপ্ন ছিল। রাজনৈতিক দর্শন ও গণতন্ত্র হত্যা করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা এসব কথা তারা বলে না, আমরাও বলতে চাই না। জনগণ এর বিচার করবে। জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে সফল। যার কর্মজীবনের তিনটি সফলতা তাকে বিশ্লেষণ করা কঠিন।’
মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা হচ্ছে সার্বভৌম দেশের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশকে ধ্বংস করেছে, তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে। সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দল বিএনপি। জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত দল মুক্তিযোদ্ধাদের দল। আর তারা হলো মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক দল।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) গণতন্ত্র হত্যা করেছিল, সেখানে জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল। এরশাদ গণতন্ত্র হত্যা করেছিল সেখানে আমাদের নেত্রী এরশাদের পতন ঘটিয়ে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। নির্বাচন যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সেজন্য সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংযুক্ত করেছিলেন।’
ডাক্তার এজেডএম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় এ সময় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক, কবি আব্দুল হাই শিকদার, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার প্রমুখ।