বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ১৫ দিনের সফরে দেশ ছাড়লেন। ক্ষমতায় টিকে থাকতে বিদেশিদের সাথে দেন-দরবার করতে গেছেন। তিনি দেশের সম্পদ বিক্রি করে আবারও ক্ষমতায় থাকতে চান। দেশের মানুষ তা মেনে নিবে না। আপনি দেশের জন্য কিছু আনতে পারেননি, তিস্তার পানি আনতে পারেননি। আপনি শুধু নিজ স্বার্থে সবকিছু বিলিয়ে দিয়ে গেছেন।’

রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আজ শনিবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে সাবেক মন্ত্রী ও মেয়র, বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এমএ মান্নানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী এসব কথা বলেন। স্মরণসভার আয়োজন করে অধ্যাপক এমএ মান্নান স্মৃতি পরিষদ।

এসময় প্রধানমন্ত্রীকে ইঙ্গিত করে রিজভী আরও বলেন, ‘আসলে আপনি (প্রধানমন্ত্রী) গ্যারান্টি চান। আবার দিনের ভোট রাতে করার নিশ্চয়তা চান। কারণ, আপনি জানেন, জনগণ আপনাকে ভোট দিবে না। শুধু ক্ষমতার স্বার্থে দেশ বিকিয়ে দিলে জনগণ আপনাকে ক্ষমা করবে না।’

অবৈধ সরকারের পতনের লাল বাতি জ্বলে গেছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘আজিজুল বারী হেলাল, সাইফুল ইসলাম নীরব, আব্দুল মোনায়েম মুন্নাসহ নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে সরকার মনে করছে তাদের শেষ রক্ষা হবে। কিন্তু এবার আর তা হবে না। অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের সকল লাল বাতি জ্বলে গেছে।’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘দেশকে জাতীয়ভাবে পঙ্গু করার জন্য, বিরোধীদল শূন্য করার জন্য চক্রান্ত চলছে। প্রধানমন্ত্রী মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে ডিজিটাল আইনসহ বিভিন্ন কালাকানুন করে বাকস্বাধীনতাকে আটক করে রেখেছে। আজ ফেসবুকে কেউ সত্য লিখলে, শেয়ার করলে শুধু তাকেই নয়, বাবা-মাসহ পরিবার পরিজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের জামিন হয় না।’

রিজভী আরও বলেন, ‘এই পৃথিবীর বিভিন্ন কুখ্যাত স্বৈরশাসকের নমুনা আমরা আওয়ামী সরকারের মাঝে দেখতে পাচ্ছি। আজকে এদের অত্যাচারের নমুনা বিট্রিশ শাসনামল, পাকিস্তান শাসনামল, হিটলার ও চেঙ্গিস খানকেও হার মানিয়েছে। এ সরকারের বর্বরতার ইতিহাসও একটি অধ্যায় হিসেবে লিপিবদ্ধ থাকবে। আপনি দেশের জন্য কিছু আনতে পারেননি, তিস্তার পানি আনতে পারেননি। আপনি শুধু নিজ স্বার্থে সবকিছু বিলিয়ে দিয়ে গেছেন।’

রিজভী বলেন, ‘জেলখানাতেও নির্যাতনের নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। বিরোধীদলের নেতাদের সেলে লাগানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। সেখানে যদি কেউ আমাদের সাথে দেখা করতে আসে তার স্থান হয় কাশিমপুর কারাগার। যেমনি স্থান রয়েছে বিএনপি নেতা সপুসহ অনেক নেতার। শুধু প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করতে এবং প্রমোশনের আশায় অতিলোভী কারা কর্মকর্তারা এগুলো করছেন।’

গাজীপুর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শওকত হোসেন সরকারের সঞ্চালনায় বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু, কেন্দ্রীয় নেতা ওমর ফারুক সাফিন, একরামুজ্জামান বিপ্লব, শাহ রিয়াজুল হান্নান, এম মঞ্জুরুল করিম রনি, যুবদল নেতা জাকির হোসেন নান্নু, মাহমুদ হাসান রাজু, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আরিফ হাওলাদার, গাজী সালাউদ্দিন, ছাত্রদল নেতা রোহানউজ্জামান শুকুর, ওলামা দলের মাওলানা নজরুল ইসলাম, গাজীপুর জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক রাশেদুল হক প্রমুখ।