দেশে উন্নত কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার উপযোগী করার আহ্বান কৃষিমন্ত্রীর
কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, বর্তমান সরকার কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ত্বরান্বিত করতে কৃষকদের ৫০-৭০% ভর্তুকিতে কৃষি যন্ত্রপাতি দিচ্ছে। এই ভর্তুকি দেওয়ায় দেশে দ্রুত কৃষি যান্ত্রিকীকরণ হচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের (আইইবি) সেমিনার হলে ‘কৃষির টেকসই উন্নয়নে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ী প্রযুক্তির ব্যবহার’ শীর্ষক তিন দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আইইবি ও এক্সপোনেট এক্সিবিশন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশের বিজ্ঞানীরা প্রচুর আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন। আমনের মতো স্বল্পজীবনকালের ধান উদ্ভাবন করেছেন। ফলে আমন ও বোরো মৌসুমের মাঝের সময়ে সরিষা আবাদ সম্ভব হচ্ছে। এটি একটি অতিরিক্ত ফসল ও নতুন ক্রপিং প্যাটার্ন। খড়া ও লবণাক্ততাসহিষ্ণু ধানের জীবনরহস্য উন্মোচন হয়েছে কয়েকদিন আগে। উপকূলে দুই মিলিয়ন হেক্টর লবণাক্ত জমি রয়েছে। সেখানে লবণাক্ততাসহিষ্ণু ধানের চাষ করে বছরে দুটি ফসল করা গেলে খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা টেকসই হবে। এ ছাড়া, ব্রি সম্প্রতি ধান কাটার যন্ত্র কম্বাইন হারভেস্টার তৈরি করেছেন দেশের বিজ্ঞানীরা; যা দামে অনেক কম ও দেশের জমিতে ব্যবহারের জন্য খুবই উপযোগী।
বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রযুক্তিগুলো মাঠ পর্যায়ে পৌঁছানো এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এসব উদ্ভাবিত প্রযুক্তি মাঠে যাচ্ছে খুবই ধীরগতিতে। আপনাদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি মাঠে না গেলে, কৃষক সুফল না পেলে, সেগুলো উদ্ভাবন করেও কোনো সুফল পাওয়া যাবে না। বিভিন্ন দেশে এখন উন্নত কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে। সেগুলোকে কীভাবে তাড়াতাড়ি দেশে ব্যবহার উপযোগী করা যায়, উৎপাদনের কাজে লাগানো যায়, তা দেখে ব্যবস্থা নিন। আমরা সরকার থেকে সর্বোচ্চ সহায়তা দেব। কিন্তু কাজটা আপনাদের করতে হবে।
শুধু আমদানি নির্ভর না হয়ে দেশে যন্ত্রপাতি তৈরিতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে কোম্পানিগুলোর উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, দেশে অনেক কোম্পানি কৃষি যন্ত্রপাতি বিক্রি করছে। এ বাজার এখন বিশাল। সেচযন্ত্র, ধান কাটার কম্বাইন হারভেস্টারসহ বিভিন্ন যন্ত্রের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় কেউ বাংলাদেশে এসব প্রস্তুত করছে না। সবাই বিদেশ থেকে আমদানি করে বিক্রি করছে।
আইইবির ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. নুরুজ্জামানের সভাপতিত্বে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বেনজীর আলম, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর, আইইবির ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. হোসাইন, স্রেডার সদস্য সিদ্দিক যোবায়ের, আইইবির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী শাহাদৎ হোসেন, এক্সপোনেট এক্সিবিশনের চেয়ারম্যান আলী রেজা প্রমুখ বক্তব্য দেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্ম পাওয়ার অ্যান্ড মেশিনারি বিভাগের অধ্যাপক প্রকৌশলী চয়ন কুমার সাহা।