ধর্মান্ধদের প্রতিহত করতে সজাগ থাকতে হবে : ধর্ম প্রতিমন্ত্রী
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশ। এখানে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সব সম্প্রদায়ের লোকজন একত্রে বসবাস করছে বলে জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। তিনি বলেন, ‘একটি ধর্মান্ধ জনবিরোধী গোষ্ঠী দেশে ধর্মীয় অসাম্প্রদায়িকতা এবং অরাজকতা সৃষ্টির জন্য সচেষ্ট রয়েছে। এদের প্রতিহত করতে হবে। এদের সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ‘ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতামূলক আন্তধর্মীয় সংলাপ’ অনুষ্ঠানে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ হচ্ছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্যই আমৃত্যু কাজ করে গেছেন। তাঁর চার মূলনীতির অন্যতম ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা। তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন গঠন করেছিলেন। বাংলাদেশ মাদ্রাসা বোর্ড করেছিলেন। তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সেই লক্ষ্যেই কাজ করছেন। আর সে কারণেই জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সব সম্প্রদায়ের লোকজন বাংলাদেশে একত্রে বসবাস করছেন।’
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে যেমন ৫৬৪টি মডেল মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন, তেমনি হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য মন্দির সংস্কার ছাড়াও হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য ১০০ কোটি টাকার ফান্ড করে দিয়েছেন।’
এ বিষয়ে মসজিদের ইমাম এবং ইসলাম ধর্মের নেতাদের সচেষ্ট হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিটি মসজিদে নামাজের আগে ইমামরা যদি উগ্রবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তাহলে দেশে উগ্রবাদ বলতে কিছু থাকবে না।’
হিন্দু, বৌদ্ধ এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতাদের প্রতিও একই আহ্বান জানান ধর্ম প্রতিমন্ত্রী। তিনি মিডিয়ার প্রতি এ বিষয়ে সহযোগিতা কামনা করেন। সব ধর্মের নেতাদের প্রতি ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষা করে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান।
প্রতিমন্ত্রী নেত্রকোনা জেলাকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জেলা উল্লেখ করে বলেন, ‘এই জেলায় সব সম্প্রদায়ের লোকজন, সব ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। একে অপরের সুখে-দুঃখে কাজ করে থাকেন।’
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আয়োজনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মনির হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য হাবিবা রহমান খান শেফালী, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অসিত সরকার সজল, পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আমিরুল ইসলাম প্রমুখ।
আন্তধর্মীয় সংলাপ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন কলমাকান্দা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক, কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ভূঁইয়া, নেত্রকোনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতাউর রহমান মানিক, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অর্পিতা খানম সুমী, মাওলানা আব্দুল বাতেন, অ্যাডভোকেট সিতাংশ বিকাশ আচার্য, নেত্রকোনা জেলা প্রেসক্লাব সম্পাদক এম মুখলেছুর রহমান খানসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতারা।