ধাপে ধাপে সিনোফার্মের ছয় কোটি টিকা আসতে থাকবে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘দেশে ভ্যাকসিনের ব্যাপক চাহিদার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জানালে তিনি দ্রুতই চীনের সিনোফার্মের ছয় কোটি টিকা কেনার ব্যাপারে নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সেই ছয় কোটি ভ্যাকসিন ক্রয়ের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় সময়মতো টাকা ছাড় দিয়ে অনুমোদন দিয়েছে। এখন ধাপে ধাপে ক্রয়কৃত সিনোফার্মের ছয় কোটি টিকা দেশে আসতে থাকবে। অন্যান্য মাধ্যমেও আমাদের আশানুরূপ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, দেশে চলমান টিকা কার্যক্রমের গতি চলমানই থাকবে।’
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের গ্র্যান্ড বলরুমে সিডিসি ও বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিন আয়োজিত ‘করোনা ও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে করণীয় বিষয়ক সভায়’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এসব কথা বলেন। এ সময় করোনা নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জাহিদ মালেক বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারলে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, কর্মহীন লোকের সংখ্যা বেড়ে যাবে। এ কারণে এখনই আমাদের করোনা নিয়ন্ত্রণ করা খুব জরুরি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সোসাইটি অফ মেডিসিনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ বিল্লাল। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব আলী নূর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলম, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ বি এম আব্দুল্লাহ, বিএসএমএমইউয়ের ভিসি অধ্যাপক শরফুদ্দিন আহমেদ, স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক ইকবাল আর্সেনাল, মহাসচিব এম এ আজিজ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন বাংলাদেশ মেডিসিন সোসাইটির মহাসচিব অধ্যাপক আহমেদুল কবীর।
করোনার দুঃসময়েও দেশের স্বাস্থ্যখাত নিয়ে ‘মিথ্যা’ সমালোচনা করা প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মাঝে মাঝে অনেক সমালোচনার মুখে পড়ি। সমালোচকরা অসুস্থ হলে কোথায় চিকিৎসা নিতে আসেন? যে ডাক্তার চিকিৎসা দেয় তাদেরকেই আপনারা সমালোচনা করেন।’ তিনি বলেন, ‘সংক্রমণ কিছুটা কমে এসেছে। মৃত্যু একটু বেশি আছে। এই সংক্রমণ আমাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এজন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। বাস-ট্রেন গণপরিবহণে গাদাগাদি করে চললে হবে না।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘পৌনে দুই কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। কোটি কোটি লোক নিবন্ধন করেছে। আমরা সবাইকে একবারে টিকা দিতে পারব না। পর্যায়ক্রমে ধারাবাহিকভাবে টিকা দেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, ‘করোনার সময় বিরোধী দলের কাউকেই মানুষের পাশে দেখিনি। শুধু টেলিভিশনে বসে সমালোচনা করতে দেখেছি। সমালোচনা করা অনেক সহজ। কাজ করা কঠিন। আজ স্বাস্থ্য বিভাগের ডাক্তাররা আক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। শুধু করোনার চিকিৎসা নয়, অন্য রোগীর চিকিৎসাও দিচ্ছেন তারা।’
ডেঙ্গু যেন না হয় সে বিষয়ে সজাগ থাকতে নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ডেঙ্গু হলে নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য বিভাগ সেবা দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করবে। তবে ডেঙ্গু যেন না হয় সেজন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আলী নূর বলেন, ‘হাসপাতালে শয্যা বাড়িয়ে লাভ হবে না যদি সংক্রমণের মূল উৎস চিহ্নিত না করে কমানোর ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হয়।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলম বলেন, ‘মহামারি করোনাভাইরাস যেন আর না বাড়ে যেজন্য সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে হবে। করোনা বেড়ে গেলে সামাল দেওয়া যাবে না। রাতারাতি হাসপাতাল বাড়ানো যাবে না। হাসপাতালে শয্যা বাড়ানো হয়েছে। এটার একটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ডিএনসিসি এক হাজার শয্যার হাসাপাতাল তৈরি করেছে। সম্প্রতি বঙ্গমাতা ফিল্ড হাসপাতালে তৈরি করা হয়েছে। তবে হাসাপাতালে শয্যা বাড়ানো সম্ভব হবে না।’