নওগাঁয় বিএনপির ২১ নেতার পদত্যাগ
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার বড়গাছা ইউনিয়ন বিএনপির সদ্য ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটি থেকে গত ১০ মার্চ ২১ জন পদত্যাগ করেছেন। ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন না করার প্রতিবাদে তারা পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে। গত ৫ মার্চ বিএনপির ওই আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়।
ইউনিয়ন বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীদের মতামত না নিয়ে গত ৫ মার্চ উপজেলা বিএনপির কয়েকজন নেতা তাঁদের পছন্দের ব্যক্তিদের নিয়ে বড়গাছা ইউনিয়ন বিএনপির ২৮ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেন। আগের কমিটি বিলুপ্ত না করে নতুন করে আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া গঠনতন্ত্রবিরোধী।
রাণীনগর উপজেলা ও জেলা বিএনপির আহ্বায়কের কাছে বড়গাছা ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি থেকে ওই ২১ নেতা পদত্যাগ করেন। পদত্যাগপত্রে তাঁরা পদত্যাগের কারণ হিসেবে বলেন, ২০১৯ সালের ৩০ অক্টোবর মহরম আলীকে আহ্বায়ক করে বড়গাছা ইউনিয়ন বিএনপির ৩২ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেয় উপজেলা বিএনপি। কিন্তু ওই কমিটি বিলুপ্তি না করেই এবং ইউনিয়ন বিএনপির বেশিরভাগ নেতাকর্মীর মতামত না নিয়ে গত ৫ মার্চ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন স্বাক্ষরিত ২৮ সদস্যের নতুন একটি আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। এই কমিটিতে ত্যাগী ও জ্যেষ্ঠ নেতাদের মূল্যায়ন করা হয়নি। এ ছাড়া আগের কমিটি বিলুপ্ত না করে নতুন কমিটি ঘোষণা করা গঠনতন্ত্র বিরোধী। নতুন ঘোষিত কমিটির আহ্বায়ক হয়েছেন বিকাশ চন্দ্র। তিনি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। আগের কমিটি বিলুপ্ত না করে নতুন কমিটি ঘোষণা এবং ত্যাগী ও জ্যেষ্ঠ নেতাদের মূল্যায়ন না করে কমিটি গঠনের প্রতিবাদে তাঁরা আহ্বায়ক কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন।
ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি থেকে পদত্যাগ করা নেতাকর্মীরা হলেন, রেজাবুল হক, জাইদুল ইসলাম, মকছেদ আলী, আমিনুল ইসলাম, শাহজাহান আলী, আবু রায়হান, আরজ উদ্দীন, মোফাজ্জল হোসেন, আওরঙ্গজেব প্রামানিক, সাজ্জাদ হোসেন, সাইদুর রহমান, সোহেল, আশিক, নীরেন চন্দ্র, আব্দুল জব্বার, শুক্কর, মোতালেব হোসেন, মনছুর, মজিদ মণ্ডল, নাছির উদ্দিন ও মোজাম্মেল হক।
বড়গাছা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সদ্য ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রেজাবুল হক বলেন, ‘কমিটি ঘোষণার আগে ইউনিয়ন বিএনপির বেশিরভাগ নেতার সঙ্গে কোনো আলোচনাই করা হয়নি। হঠাৎ করে একদিন ফেসবুকে দেখছি নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। পূর্বের কমিটির বিলুপ্ত না করে নতুন কমিটির অনুমোদন এবং উপজেলা বিএনপির একজন সদস্যকে ইউনিয়ন কমিটির মূল দায়িত্ব দেওয়া গঠনতন্ত্র বিরোধী। এই কমিটি আমরা মানি না।
২০১৯ সালে ঘোষিত ৩২ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক মহরম আলী বলেন, ‘আমার কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষণা না করেই আবার একটি নতুন কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটি কেমন করে সম্ভব। যেখানে গঠনতন্ত্র মানা হয় না, ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করা হয় না, সেখানে আমি নিজেকে জড়াতে চাই না।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক রোকনুজ্জামান খান বলেন, আগের কমিটি ছিল অকার্যকর। তাই ওই ইউনিয়নে দ্রুত একটি পুর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার লক্ষ্যে নিয়ম মেনে নতুন করে একটি আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। থানা বিএনপি দলের গঠনতন্ত্র মেনেই সব কাজ করেছে। যাঁরা পদত্যাগ করেছেন, তাঁরা রাগ-ক্ষোভ থেকে এটা করেছেন। ইতোমধ্যে কয়েকজন পদত্যাগপত্র ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছেন।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমঝোতা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম যেন ব্যাহত না হয়, সে ধরনের কোনো কর্মকাণ্ড চলতে দেওয়া হবে না।