নওগাঁয় স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগ
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার একডালা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) এবং তার সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এবং তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাণীনগর উপজেলার একডালা ইউপির আবাদপুকুর বাজারের চারমাথায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এবং তার সমর্থকদের মারধরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর অন্তত ২০ জন সমর্থক আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৮ থেকে ১০ জনকে নওগাঁ ও আদমদীঘি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এ সময় হামলাকারীরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর ব্যক্তিগত অফিসের সামনে থাকা ১৪টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে বলেও অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. রুহুল আমিন।
মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘আমি ও আমার সমর্থকরা এলাকায় প্রচারণা শেষ করে ব্যক্তিগত অফিসে আসার সঙ্গে সঙ্গে নৌকা পদপ্রার্থী ও সমর্থকরা আমাকেসহ আমার লোকজনের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে রড, লাঠি, জিআই পাইপ দিয়ে মারপিট শুরু করে। এ সময় আমার অফিসের সামনে থাকা ১৪টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে এবং তাদের মারপিটে আমার ২০ জন লোক আহত হয়। আমি এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করেছি।’
এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে, সব অভিযোগ অস্বীকার করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাহজাহান আলী বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা আমার সমর্থক ও দলীয় লোকজনের ওপর হামলা চালিয়ে মারপিট করে ৮ থেকে ১০ জনকে আহত করেছে। এ ছাড়া ভাঙচুর করেছে তিন-চারটি মোটরসাইকেল। তারা নিজেরাই এসব ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে।’
শাহজাহান আলী আরও বলেন, ‘আমি ও আমার লোকজন শিয়ালা থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শেষ করে আবাদপুকুর চারমাথা দিয়ে গুয়াতা গ্রামে প্রচারণা চালানোর উদ্দেশে যাচ্ছিলাম। এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা আমাদের বাধা দেয় এবং আমার লোকজনকে দেখে বিভিন্ন বাজে মন্তব্য করছিল। সেখানে অঘটন ঘটতে পারে-এমন আশঙ্কায় আমি আর প্রচারণায় না গিয়ে আমার অফিসের দিকে ফিরে যাই। এমতাবস্থায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা আমার লোকজনের সঙ্গে তর্কে জড়ায় এবং একজনের গাড়িতে লাথি মারলে কয়েকজনের মধ্যে মারপিটের ঘটনা ঘটে।’
এ ব্যাপারে রাণীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন আকন্দ বলেন, ‘ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। একটি সুন্দর ও উৎসব মুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষে পুলিশ বাহিনী কঠোর অবস্থানে রয়েছে। নির্বাচনকে ঘিরে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। আবাদুপুকুরের ঘটনায় কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গে আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। স্বতন্ত্র প্রার্থী রুহুল আমিনের কাছ থেকে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা খতিয়ে দেখছেন।’