নওগাঁয় ১০ মোটরসাইকেলসহ চুরির অভিযোগে গ্রেপ্তার ৭
নওগাঁ শহরের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ১০টি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আন্তজেলা মোটরসাইকেল চোরচক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশ।
আজ সোমবার দুপুরে থানা চত্বরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান।
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা হলেন শহরের ইঁদুর বটতলী এলাকার জালাল মোল্লা (২৬), চকইলাম এলাকার এস এম গোলাম রাব্বানী (৩৬), মধ্যদুর্গাপুর হাজিপাড়ার নাজিম উদ্দিন সরদার (৬৫) ও ইমরান হোসেন (৩৫), চকমুক্তার বউবাজার এলাকার নুরুল ইসলাম (৪৯), চকবাড়িয়া মধ্যপাড়া এলাকার নাহিদ হোসেন (২৫) এবং মকরামপুর গ্রামের শরিফ হোসেন (৩১)।
পুলিশের দাবি, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা আন্তজেলা মোটরসাইকেল চোরচক্রের সংঘবদ্ধ সদস্য। তাঁরা বিভিন্ন কৌশলে নওগাঁসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মোটরসাইকেল চুরি করে সেগুলোর রং পরিবর্তন, চেসিস নম্বর ও ইঞ্জিন নম্বর ওভার লেপিং করে সেগুলো আবার দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে আসছিল।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান বলেন, গত ২ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টার দিকে নওগাঁ সদর উপজেলার চকগৌরী বাজার এলাকার টিএমএসএস এনজিও গেটের সামনে থেকে ফরিদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির সুজুকি হায়াতে ব্রান্ডের একটি মোটরসাইকেল চুরি হয়। এ ঘটনায় ফরিদুল ইসলাম বাদী হয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নানের নির্দেশনায় এ ঘটনা তদন্তে নামে নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশ। নওগাঁ জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গোপন সোর্সের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল রোববার বিকেলে নওগাঁ শহরের ঢাকা বাসস্টান্ড এলাকা থেকে চোরচক্রের সদস্য জালাল মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে শহরের ইঁদুর বটতলী এলাকায় তাঁর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে একটি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল সন্ধ্যা ও রাতে শহরের খাস-নওগাঁ ও পার-নওগাঁ এলাকায় অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় বাকি ৯টি চোরাই মোটরসাইকেল। এ সময় চোরচক্রের অপর ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে নওগাঁ সদর থানায় একটি মামলা হয়েছে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি সবাই একই চক্রের সদস্য। এরা আন্তজেলা সংঘবদ্ধ মোটরসাইকেল চোরচক্রের সদস্য। এদের মধ্যে কেউ সরাসরি মোটরসাইকেল চুরি করে, কেউ মোটরসাইকেলের আকার, নম্বর ও রং পরিবর্তন করে এবং কেউ চোরাই মোটরসাইকেল বিক্রির সঙ্গে জড়িত। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের কাছ থেকে আরও তথ্য উদ্ধারের জন্য আদালতে তাঁদেরকে ১০ দিনের রিমান্ড আনার আবেদন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাবিনা ইয়াসমিন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাকিবুল হাসান ইবনে রহমান, নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল, পরিদর্শক (তদন্ত) রাজিবুল ইসলাম, উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল জান্নাত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল বলেন, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের আদালতে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক তাঁদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নওগাঁয় এ পর্যন্ত চুরি যাওয়া সব মোটরসাইকেল উদ্ধার ও চোরচক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।