নগর পরিবহণে যুক্ত হচ্ছে ১০০ ইলেকট্রিক বাস : মেয়র তাপস
চলতি বছরের মধ্যেই ঢাকা নগর পরিবহণের বহরে ১০০টি নতুন ইলেকট্রিক বাস সংযোজন করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
গতকাল মঙ্গলবার (৯ মে) নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির ২৭তম সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মেয়র ও বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির সভাপতি ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এ তথ্য জানান।
মেয়র তাপস বলেন, ‘যদিও ছোটখাটো কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তারপরও ঢাকা নগর পরিবহণ বীরদর্পে এগিয়ে চলছে। সুনির্দিষ্টভাবে এসব ছোটখাটো প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করছি এবং সেগুলো সংশোধন করছি। আপনারা জেনে খুশি হবেন, এ বছরের মধ্যেই ঢাকা নগর পরিবহণে বিআরটিসির মাধ্যমে ১০০টি ইলেকট্রিক বাস সংযুক্ত করব। এর মাধ্যমে ঢাকাকে পরিবেশবান্ধব শহর হিসেবে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব। বায়ুদূষণের যে তকমা আমরা শুনি, সেখান থেকেও আমরা এগিয়ে যেতে পারব, বায়ুদূষণ থেকে মুক্ত হতে পারব।’
এ সময় পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা ২১ নম্বর যাত্রাপথে ট্রান্স সিলভা পরিবহণের বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘এ ব্যাপারে কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ২১ নম্বর যাত্রাপথে ট্রান্স সিলভা ব্যর্থ হয়েছে। সুতরাং, এই পুরো যাত্রাপথটি এখন বিআরটিসি দ্বারা পরিচালিত হবে। বিআরটিসি সেটা নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এজন্য ট্রান্স সিলভার সব অনুমতি বাতিল করছি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি—ঢাকা নগর পরিবহণে তাদের যেসব বাস ছিল, যেগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল সেগুলো জব্দ করব। সুতরাং ২১ নম্বর ও ২৬ নম্বর যাত্রাপথ বিআরটিসি দ্বারা পরিচালিত হবে।’
এ সময় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা ছিল আরবান ক্লাস্টারের ছয়টি এবং সাব আরবানের তিনটি মিলে ৯টি ক্লাস্টার করা হবে। প্রথমে গ্রিন ক্লাস্টার নিয়ে আমরা কাজ করছি। যেখানে ২১ থেকে ২৮ নম্বর মোট আটটি রুট নিয়ে মাস্টারপ্ল্যান করেছিলাম। তার পরিকল্পনা হিসেবে ২১, ২২, ২৩, ২৪, ২৫, ২৬ এবং আজকে ২৭ ও ২৮ এই মোট আটটি রুট অন্তর্ভুক্ত হলো। আজকের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে—২৭ ও ২৮ নম্বর রুট চালুর লক্ষ্যে টেন্ডার আহ্বান করা হবে। সবার একটি সার্থকতা বলতে চাই, আমরা টোটাল গ্রিন ক্লাস্টার যেটা আছে, এটি একটি কোম্পানির আওতায় নিয়ে আসতে বেশ অগ্রসর হতে পারছি।’
ফিটনেসবিহীন বাস বন্ধের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ঢাকা উত্তর সিটি মেয়র আতিক বলেন, ‘ফিটনেসবিহীন গাড়ির সংখ্যা দিন দিন কমছে। এ সংখ্যা কমানোর চেষ্টা চলছে। এসব বাসের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর বিষয়ে আজকের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২১, ২২ ও ২৬ নম্বর রুটে যথাক্রমে ২১ মে থেকে ১ জুন, ১১ জুন থেকে ১৫ জুন ও ১৬ জুলাই থেকে ২০ জুলাই ডিএনসিসি, ডিএসসিসি, ডিএমপি ও বিআরটিএ যৌথভাবে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করবে। পুরাতন রুট পারমিটবিহীন, ফিটনেসবিহীন কোনো বাস চলতে দেওয়া হবে না। নগর পরিবহণে কোনো পুরোনো বাস অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। শুধু নতুন বাস দিয়েই নগর পরিবহণ পরিচালিত হবে।’
সভায় অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা পরিবহণ সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক সাবিহা পারভীন, বিআরটিএর চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান, সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. ইসহাক, গণপরিবহণ বিশেষজ্ঞ ড. এস এম সালেহ উদ্দিন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির সভাপতি খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, ঢাকা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির সভাপতি আজমল উদ্দিন আহমেদসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।