নদীবন্দরে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছনার অভিযোগ
বরিশাল নদীবন্দরে প্রবেশ টিকেট কাটাকে কেন্দ্র করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) চার শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছনার অভিযোগ উঠেছে। বিআইডব্লিউটি’র কাউন্টার স্টাফদের বিরুদ্ধে গতকাল এ অভিযোগ ওঠে। এতে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বরিশাল নদীবন্দরে ঢুকে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ও বিআইডব্লিউটি’র মধ্যস্ততায় ঘটনার সমাধান হয়। যদিও তিন দিনের মধ্যে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে আন্দোলনে নামবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
গতকাল শুক্রবার রাতে নদীবন্দরের দুই নম্বর গেটের কাউন্টার থেকে ঘটনার সূত্রপাত।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাজমুল হোসাইন বলেন, ‘একজন অতিথিকে বিদায় দিতে বরিশাল নদীবন্দরে রাত ৮টার দিকে যায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইতিহাস ও সভ্যতা বিভাগের আরিফুর রহমান, রাকিব, আশিক এবং ব্যবস্থাপনা বিভাগের ইমরান। এ সময় ঢাকায় যে যাবে, তার প্রবেশ টিকেট ক্রয় করে। বাকি তিন জনের টিকেট না কাটা নিয়ে কাউন্টারে থাকা শুল্কপ্রহরী মাইনুলের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা হয় শিক্ষার্থীদের।’
নাজমুল হোসাইন আরও বলেন, ‘বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে টিকেট না ছিঁড়ে তা পকেটে রেখে দিয়ে শুল্কপ্রহরী দর্শনার্থী ও যাত্রীদের ঢুকতে দেন। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলে তিন শিক্ষার্থীকে মারধর করতে করতে বন্দর ভবনের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যান শুল্কপ্রহরীরা এবং একটি রুমে আটকে রেখে মারধর ও কানে ধরিয়ে ওঠবস করান।’
বিষয়টি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা জানতে পেরে রাত ১০টার দিকে নদীবন্দরে গিয়ে প্রতিবাদ জানান।
মারধরে আহত রাকিব বলেন, ‘আমি ঢাকায় যাওয়ার জন্য বরিশাল নদীবন্দরে এসেছিলাম। আমাকে এগিয়ে দিতে তিন বন্ধু আমার সঙ্গে আসে। এ সময় কাউন্টারের লোকজন টিকেট না ছিঁড়ে তা পকেটে ঢোকাচ্ছিল। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে আমাদের মারধর করে ও কান ধরে ওঠবস করায়।’
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী অমিত হাসান রক্তিম বলেন, ‘আমরা তিন দিনের মধ্যে অভিযুক্ত স্টাফদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আলটিমেটাম দিয়েছি। এ সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আন্দোলনে যাব।’
শুল্কপ্রহরী মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘আমি গিয়ে দেখি, কাউন্টারের স্টাফ জাকিরের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মারামারি চলছে। এরপর সবাইকে নিয়ে ওপরে যাই। পরে ওদের বুঝিয়ে পাঠিয়ে দিই। আমার সঙ্গে কারও কোনো ঝামেলা হয়নি।’
বরিশাল নদীবন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। যাঁরা অপরাধ করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. খোরশেদ আলম বলেন, ‘নদীবন্দর কর্মকর্তার সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তিনি বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নদীবন্দরে প্রবেশ করার সময় আইডি কার্ড দেখালে তাঁরা ফ্রিতে ঢুকতে পারবেন। তা ছাড়া যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নদীবন্দর কর্মকর্তার পক্ষ থেকে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।’
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার ফজলুল করিম বলেন, ‘একটি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। বিষয়টি সমাধান হয়েছে।’