নদী ভাঙনে বাস্তুচ্যুতদের স্বপ্নের কথা কেউ লেখে না : তথ্যমন্ত্রী
নদী ভাঙনে বাস্তুচ্যুতদের স্বপ্নের কথা কেউ লেখে না বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। আজ রোববার (১৯ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবে দৈনিক দেশ বর্তমান পত্রিকার নবরূপে আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন মন্ত্রী। অনুষ্ঠানটিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাছান মাহমুদ।
সমাজে উন্মোচিত হয়নি এমন বিষয়গুলো নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করার জন্য সাংবাদিকদের আহ্বান জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাস্তায় যে পাগলটা বিড়বিড় করে, তার পাগল হওয়ার পেছনে একটা গল্প আছে। কিন্তু, কেউ তা শোনে না, শোনার প্রয়োজনও মনে করে না। যে মানুষটি নদী ভাঙনে কিংবা অন্য কারণে বাস্তুচ্যুত হয়ে শহরের ফুটপাতে আশ্রয় নিয়েছে তাদের স্বপ্নের কথা কেউ লেখে না। যে মেয়েটি পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে হয়তো নিষিদ্ধ কোনো জায়গায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে, তার বেদনার কথা কেউ ভাবে না, লেখেও না। সেগুলোও উন্মোচিত হওয়া প্রয়োজন।’
নিজের শৈশবের কথা টেনে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমার ছেলেবেলায় অনেক দৈনিক পত্রিকায় ছোটদের পাতা থাকত, সেখানে আমিও লিখেছি। সেটি অনেক আনন্দের। কিন্তু, এখন আর ছোটদের পাতা নেই, হারিয়ে গেছে। রূপচর্চা ও রান্নাবান্নার পাতা আছে, কিন্তু ছোটদের পাতা নেই। এই পাতা কিশোর-তরুণদের মনন তৈরি ও প্রতিভা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
গণমাধ্যমের কথা টেনে মন্ত্রী বলেন, ‘গত ১৪ বছরে দেশে গণমাধ্যমের ব্যাপক বিকাশ হয়েছে, পাশাপাশি অনেকগুলো চ্যালেঞ্জও যুক্ত হয়েছে। শুরু হয়েছে সবার আগে সংবাদ দেওয়ার প্রতিযোগিতা। আর এটি করতে গিয়ে ভুল ও বিভ্রান্তিকর সংবাদও ছড়িয়ে পড়ছে। অনলাইনের ক্ষেত্রে এটি বেশি ঘটে। এ কারণেই স্বাধীনতার পাশাপাশি প্রয়োজন দায়িত্বশীলতার।’
হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘গণমাধ্যম শুধুমাত্র সংবাদ পরিবেশন কিংবা বিনোদনের জন্য নয়। একটি পত্রিকা মানুষের তৃতীয় নয়ন খুলে দেয়, অনুন্মোচিত বিষয়গুলোকে উন্মোচিত করে। সমাজ, রাষ্ট্র ও সরকার যে দিকে দৃষ্টিপাত না করে, সেদিকে দায়িত্বশীলদের দৃষ্টি নিতে পারে তারা। করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দিতে পারে।’
‘আমরা একটি বহুমাত্রিক গণতান্ত্রিক সমাজে বসবাস করি। এই সমাজ ব্যবস্থাকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করাতে হলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অবশ্যই প্রয়োজন। দেশের গণমাধ্যম যে পরিমাণ স্বাধীনতা ভোগ করে, যেভাবে সবকিছু লিখতে পারে পৃথিবীর অনেক উন্নয়নশীল দেশেও সেটি করা যায় না।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণমাধ্যমের বিকাশের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘২০০৯ সালে দৈনিক পত্রিকার সংখ্যা ছিল মাত্র সাড়ে চারশ। এটি এখন সাড়ে ১২শ’র বেশি। টেলিভিশনের সংখ্যা ছিল ১০টি। এখন সম্প্রচারে আছে ৩৬টি। আরও কয়েকটি খুব দ্রুত সম্প্রচারে আসবে। বেসরকারি রেডিও লাইসেন্স দেওয়া আছে ২৪টি, ১৪-১৫টি সম্প্রচারে আছে। একইসঙ্গে গত ১৪ বছরে অনলাইন গণমাধ্যমেরও ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে। রেজিস্ট্রেশনের জন্য আমাদের কাছে পাঁচ হাজারের বেশি আবেদন পড়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকশ অনলাইনকে রেজিস্ট্রেশনও দেওয়া হয়েছে।’