নর্থসাউথের ভিসিকে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য থেকে বাদ দেওয়ার দাবি
বোর্ড অব ট্রাস্টিজ পুনর্গঠন করে নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে (ভিসি) বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য করায় আইনের ব্যত্যয় হয়েছে। এটি পরিবর্তনের দাবি তুলেছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি। সমিতি বলছে— বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বেতন নেন। পদাধিকার বলে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য সচিব। তাহলে শিক্ষাবিদ হিসেবে তাকে আবারও কেন বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য করা হবে। এটা আইনের ব্যত্যয়।
আজ শনিবার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদাধিকার বলে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য সচিব। তাহলে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় তিনি আবারও ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হবেন কীভাবে? ৩৫(৭) ধারা অনুযায়ী যদি দেওয়া হয়, তাহলে তিনি ভিসি হতে পারেন না। কারণ, ভিসিও হবেন আবার ট্রাস্টিও হবেন, তা তো আইনে নেই। আইনে আছে—ট্রাস্টিরা কোনও সুবিধা নিতে পারবেন না। কিন্তু উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে বেতন নেন। চ্যান্সেলরের মাধ্যমে নিয়োগ পেয়েছেন। তিনি আবার ট্রাস্টি হন কীভাবে?
বলা হয়েছে, শিক্ষাবিদ যদি হতে পারেন, তাহলে দেশে কি আর কোনও শিক্ষাবিদ নেই? যিনি ট্রাস্টি তিনি বেতন নিতে পারেন না, ট্রাস্টি বেতন নেবেন এটি আইনে নেই। আমার মনে হয়, এটি আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সরকার যদি চায়, আইনে যদি থাকে, তাহলে দিতে পারে। তাহলে একজন শিক্ষাবিদকে দিতে হবে, সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে নয়। বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি মনে করে, এটি আইনের ব্যত্যয় হয়েছে।’
বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ৩৫(৭) ধারার প্রয়োগ করে আচার্যের অনুমোদনে এটি করা হয়েছে। আচার্যকে আইনের এই ধারায় ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, এই ক্ষমতা প্রয়োগ করেছেন আচার্য।
গত ১৬ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ পুনর্গঠন করা হয়। বর্তমানে দায়িত্বরত উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলামকে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য করা হয়েছে শিক্ষাবিদ হিসেবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়ার বিষয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেন বলেন, ‘নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ই নয়, যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন ঘটনা ঘটতে পারে। স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হলেই এমন ঘটনা যাতে না ঘটে, বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি সেটি চায়—এমন কাজ যেন না করা হয়। মন্ত্রণালয়ের যারা এ কাজটি করেছেন, তারা সরকারকে বিব্রত করেছেন বলে মনে হয়। এই আদেশ পরিবর্তন করা দরকার।
ইউজিসিও সঠিক ভূমিকা পালন করছে না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘ইউজিসিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন জন ডিন থাকেন খণ্ডকালীন সদস্য, তিন জন ভিসি থাকেন খণ্ডকালীন সদস্য। কিন্তু শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয় থাকলেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একজন প্রতিনিধিও রাখা হয় না। অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল আইনে বলা আছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি থেকে একজন প্রতিনিধি থাকবে, কিন্তু তা রাখা হয় না।’