নাইকো মামলা : খালেদা জিয়া অসুস্থ, শুনানির নতুন দিন ধার্য
নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি পিছিয়ে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেছেন আদালত।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতার আবেদন মঞ্জুর করে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অস্থায়ীভাবে স্থাপিত ঢাকার নবম বিশেষ জজ শেখ হাফিজুর রহমান এ আদেশ দেন।
খালেদা জিয়ার পক্ষে সময়ের আবেদনে শুনানি করেন আইনজীবী মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার, জাকির হোসেন, জিয়া উদ্দিন জিয়া, অ্যাডভোকেট শিমুল বিশ্বাস প্রমুখ।
আইনজীবী মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে অসুস্থ। এ ছাড়া আসামি ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে রয়েছেন। এ কারণে আসামিদের অনুপস্থিতিতে শুনানি সম্ভব নয়, সময় প্রয়োজন।
মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার আরো বলেন, ‘আমি আদালতে বলেছি, সাংবাদিকদের বসার জন্য কোর্টের ভেতরে আসন রয়েছে। কিন্তু কারাকর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের প্রবেশের অনুমতি দেয়নি। অনুমতি দেওয়া হোক।’ পরে আদালত আগামী তারিখ থেকে বিষয়টি বিবেচনা করবেন বলে জানান। একইসঙ্গে ১৬ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।
গত ১ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়। ওই দিন মহামারির মধ্যে বাইরে বের হওয়া নিরাপদ নয়—এই যুক্তি দেখিয়ে খালেদা জিয়ার পক্ষে সময়ের আবেদন করলে সে আবেদন মঞ্জুর করে বিচারক সাত দিন সময় দিয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি অভিযোগ গঠনের শুনানির তারিখ ধার্য করেন এবং খালেদা জিয়াসহ আসামিদের সবাইকে হাজির হতে বলেন। একইসঙ্গে খালেদা জিয়াকে নাইকো মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তৎকালীন সহকারী পরিচালক তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন।
২০১৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এতে তাঁদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, তৎকালীন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন মুখ্য সচিব কামাল উদ্দীন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউসুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এমএএইচ সেলিম এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ। সাবেক প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেনের মৃত্যু হওয়ায় তাঁকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
দুদকের করা অপর দুই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। সেখান থেকে পরে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায়ই সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পেয়ে তিনি গুলশানের বাসায় অবস্থান করছেন।