নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের বেশিরভাগ রোহিঙ্গা বসতি ভস্মীভূত
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমের তমব্রু সীমান্তের কোনারপাড়ার শূন্যরেখায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল বুধবার (১৮ জানুয়ারি) রাত থেকে আর কোনো গোলাগুলি ও সংঘর্ষের কথা শোনা যায়নি বলে জানিয়েছেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোমেন শর্মা।
আজ বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে ইউএনও এ তথ্য জানিয়েছেন।
ইউএনও বলেন, ‘গতকাল মধ্যরাত থেকে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। ফলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক বলে ধরে নেওয়া যায়। শূন্যরেখায় আন্তর্জাতিক রীতি মেনে বিজিবিসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ করার এখতিয়ার নেই। ফলে ওখানে প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে এখনও স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না। তবে যতটুকু দেখা যাচ্ছে গতকাল বিকেলে দেওয়া আগুনে রোহিঙ্গা ক্যাম্পটির ৭০ থেকে ৮০টি ঘর ছাড়া বাকিগুলো পুড়ে গেছে। শূন্যরেখার এই রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে সাধারণ রোহিঙ্গারা পাশের স্কুল প্রাঙ্গণে আশ্রয় নেয়।’
২০১৭ সালের আগস্টে বিপুল রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে। এর মধ্যে ১১ লাখ রোহিঙ্গা উখিয়া-টেকনাফের ৩৩টি ক্যাম্পে অবস্থান নিলেও কিছু রোহিঙ্গা শূন্যরেখার ক্যাম্পটিতে বসবাস করত। যে ক্যাম্পটিতে বাংলাদেশের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়, আন্তর্জাতিক কোনো সংস্থা সহায়তা না করলেও আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি (আইসিআরসি) সহায়তা করে আসছিল।
আইসিআরসির তথ্য মতে, শূন্যরেখার ক্যাম্পটিতে ৬৩০টি ঘরে সাড়ে চার হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করত।
গতকাল ভোরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্থিত এই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মিয়ানমারের দুই বিদ্রোহী পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ, গোলাগুলি ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। গোলাগুলিতে এক রোহিঙ্গা নিহত ও দুজন আহত হয়। দফায় দফায় সংঘর্ষ, গোলাগুলির পর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পটির বিভিন্ন ঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে শূন্যরেখার এই রোহিঙ্গা ক্যাম্পটিতে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গ্রুপ আরসার ঘাঁটি গড়ে তোলা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।