নারী কেলেঙ্কারির ঘটনা ফাঁস করায় গৃহবধূকে ধর্ষণ, আ. লীগ নেতা গ্রেপ্তার
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দুই নেতার নারী কেলেঙ্কারির প্রতিবাদ এবং ঘটনা ফাঁসের অভিযোগে ধর্ষণের শিকার হলেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার এক গৃহবধূ। এ ঘটনায় আবু হানিফা নামের স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত আবু হানিফা পাকুন্দিয়া উপজেলার পাটুয়াভাঙ্গা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। এ মামলার অপর অভিযুক্ত জালাল উদ্দিন বাচ্চু পাটুয়াভাঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলে জানা গেছে।
পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সারোয়ার জাহান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আজ দুপুরে ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে দুই আওয়ামী লীগ নেতাকে আসামি করে পাকুন্দিয়া থানায় মামলা করেন। এরপরই আজ বিকেলে আবু হানিফাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ মে দিবাগত রাতে বাড়িতে একা থাকার সুযোগ নিয়ে আসামিরা ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন। ওই ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী ঢাকায় চাকরি করেন। তাঁর মেয়েদের বিয়ে হয়েছে আর বড় ছেলে ঢাকায় কোচিং করছিলেন। এমন পরিস্থিতিতে তিনি অধিকাংশ সময় একাই বাড়িতে থাকেন। ঘটনার দিন বাড়িতে থাকা স্নাতকোত্তরের পড়ুয়া ছেলে জেলা শহরে ছিলেন।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ জানান, প্রায় প্রতিদিন রাতেই জালাল উদ্দীন বাচ্চু আবু হানিফ নামের এক ব্যক্তিকে নিয়ে গভীর রাতে তাঁর ঘরের পেছনের নির্জন স্থানে নারী এনে অবৈধ মেলামেশা করতেন। এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় এবং আশপাশের লোকজনের কাছে এসব ঘটনা ফাঁস করেন। এ কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে দুজনে মিলে ধর্ষণ করেন।
এরপর এ ঘটনায় মামলা না করতে আসামিরা ওই গৃহবধূ ও তাঁর সন্তানদের প্রাণনাশের হুমকিসহ বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখান। সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হলে আজ বাদী এ মামলা করেন।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ ও তাঁর ছেলেমেয়েরা জানায়, তাদের প্রাণে মেরে ফেলাসহ নিয়মিতভাবে ভয়ভীতি দেখাতেন ওই অভিযুক্তরা। যাতে তারা মামলাসহ ঘটনা প্রকাশ না করে। ভুক্তভোগীর প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার চায় যেন ভবিষ্যতে আর কোনো নারী এমন নির্যাতনের শিকার না হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আসাদুজ্জামান টিটু বলেন, ‘মামলার বাকি আসামি জালাল উদ্দিন বাচ্চুকে আটক করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং ঘটনাটির তদন্ত চলছে।’
তবে অভিযুক্ত পাটুয়াভাঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দিন বাচ্চু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি যেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি না হতে পারি সেজন্য আমার সুনাম নষ্ট করতে একটি কুচক্রি মহল এই মেয়েকে দিয়ে এমন কথা ছড়াচ্ছে।’