নারী চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করতেন ভুয়া পুরুষ ‘চিকিৎসক’
নুরসসাফা জাহাঙ্গীর ডিগ্রিধারী দন্ত্য চিকিৎসক নন। তিনি এক নারী চিকিৎসকের ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জারির (বিডিএস) রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করতেন। এ ছাড়া তিনি ভারতের কলকাতার একটি ডেন্টাল কলেজের ভুয়া সনদও ব্যবহার করতেন।
শুধু তাই নয়, নুরসসাফা জাহাঙ্গীর বিডিএস ইন্টার্নশিপ ট্রেনিংয়ের সনদসহ চিকিৎসা সংক্রান্ত অন্যান্য সনদও জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করেছেন। যা তৈরি করতে তিনি তিন লাখ টাকা খরচ করেছেন।
ভুয়া এসব সনদ ব্যবহার করে নুরসসাফা জাহাঙ্গীর নিজেকে একজন দক্ষ দন্ত্য চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিয়ে রোগীর চিকিৎসা করতেন। একই প্রক্রিয়ায় তিনি ১০ থেকে ১২ বছর ধরে রোগীকে ভুল চিকিৎসা দিয়ে আসছেন বলে র্যাবের দাবি।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ এবং গোয়েন্দা সংস্থার গোপন তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর রমনা থানাধীন শান্তিনগর মসজিদ মার্কেটে অভিযান পরিচালনা করে ওই ভুয়া দন্ত্য চিকিৎসককে দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন র্যাব-৩-এর ভ্রাম্যমাণ আদালত।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, অভিযানের সময় ‘ওরাল ভিউ ডেন্টাল’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির মালিক নুরসসাফা জাহাঙ্গীর।
পলাশ কুমার বসু বলেন, ‘আমাদের কাছে ভুক্তভোগী রোগীরা অভিযোগ জানিয়েছিলেন। এরপর আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা সেসব অভিযোগের সত্যতা পায়। সেসব তথ্য-উপাত্ত নিয়ে আজ দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে নুরসসাফা জাহাঙ্গীরকে দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।’
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ‘অভিযানের প্রায় শেষ পর্যায়ে নুরসসাফা জাহাঙ্গীর স্বীকার করেছেন তাঁর সব ডিগ্রিই ভুয়া এবং কলকাতার একটি কলেজের ডিগ্রিসহ অন্যান্য ডিগ্রি তিনি তিন লাখ টাকার বিনিময়ে নকলভাবে তৈরি করেছেন। ভয়ংকর ব্যাপার হচ্ছে, তিনি এক নারী চিকিৎসকের বিডিএস রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করতেন। অথচ ওই নারী এ ব্যাপারে কিছুই জানতেন না। আমি ওই নারী চিকিৎসককে থানায় মামলা দায়ের করার পরামর্শ দিয়েছি। কারাদণ্ডাদেশ দেওয়ার পর নুরসসাফা জাহাঙ্গীরকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’