নাসির-তামিমার বিচার শুরুর আদেশ চ্যালেঞ্জ করে রিভিশন
ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তাঁর স্ত্রী পরিচয় দেওয়া তামিমা সুলতানা তাম্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েশের আদালতে আজ রোববার এ রিভিশন মামলা দায়ের করা হয়। আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) তাপস কুমার পাল এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তাপস কুমার বলেন, ‘আজ ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে নাসির ও তামিমা রিভিশন দায়ের করেন। বিচারক শুনানি শেষে রিভিশন গ্রহণ করেছেন এবং নিম্ন আদালতের নথি তলব করেছেন।’
এর আগে ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। গত বছরের ৩১ অক্টোবর নাসির ও তামিমা ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালতে হাজির হয়ে জামিন পান। গত ৩০ সেপ্টেম্বর তাঁদের বিরুদ্ধে এ মামলায় সমন জারির নির্দেশ দেন আদালত।
মামলার তদন্তে ক্রিকেটার নাসির হোসেন, সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের বিমানবালা তামিমা সুলতানা তাম্মী এবং তামিমার মা সুমি আক্তারকে দোষী উল্লেখ করে প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
ডিভোর্স পেপার ছাড়াই অন্যের স্ত্রীকে বিয়ে করার অভিযোগে ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তামিমা সুলতানা তাম্মীর বিরুদ্ধে করা মামলাটি গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
এর আগে ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসীমের আদালতে তামিমার সাবেক স্বামী রাকিব হাসান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
রাকিবের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান এ বিষয়ে এনটিভি অনলাইনকে বলেছেন, ‘২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বাদীর (রাকিব হাসান) সঙ্গে ১ নম্বর আসামি তামিমা সুলতানার ইসলামি শরীয়ত অনুযায়ী, তিন লাখ এক টাকা দেনমোহরে বিয়ে এবং রেজিস্ট্রি হয়। বিয়ের পর থেকে তাঁরা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সংসার করতে থাকেন। তাঁদের এক মেয়ে রয়েছে, যার বর্তমান বয়স আট বছর।’
মামলা সূত্রে আরও জানা যায়, তামিমা পেশায় একজন বিমানবালা। তিনি সৌদিয়া এয়ারলাইন্সে কর্মরত রয়েছেন। চাকরির সুবাদে তিনি ২০২০ সালের ১০ মার্চ সৌদিতে গিয়েছিলেন। মহামারির কারণে জরুরি অবস্থা সৃষ্টি হলে সেখানেই অবস্থান করেন। এ সময় ফোন এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে রাকিবের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হতো।
মামলায় বলা হয়, ‘চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি তামিমার সঙ্গে ২ নম্বর আসামির (ক্রিকেটার নাসির) কথিত বিয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে তা বাদীর নজরে আসে। বাদী এ ধরনের ছবি দেখে হতবাক হয়ে যান। পরবর্তীকালে পত্রিকায় এই বিষয়ে সংবাদ দেখে তিনি ঘটনার বিষয়ে নিশ্চিত হন।’
এ ছাড়া তাঁদের গায়ে হলুদ ও বিয়ে পরবর্তী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান যথাক্রমে ১৭ ও ২০ ফেব্রুয়ারি সম্পন্ন হয়, যা এরই মধ্যে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
মামলায় আরও বলা হয়, ‘তামিমা বাদীর সঙ্গে বিয়ের সম্পর্ক চলমান থাকা অবস্থায় নাসিরের সঙ্গে বিয়ে-বন্ধনে আবদ্ধ হন। নাসির বাদীকে ফোন করে জানান যে সম্পূর্ণ বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত এবং তার সঙ্গে তামিমা আছেন। বাদীর সঙ্গে বিয়ের সম্পর্ক চলমান থাকাবস্থায় তামিমার নাসিরকে বিয়ে করা, যা ধর্মীয় এবং রাষ্ট্রীয় আইনে সম্পূর্ণ অবৈধ। আসামির সঙ্গে তিনি অবৈধ বিয়ের সম্পর্ক দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন, যা নিকৃষ্ট ব্যভিচার।’
আরও বলা হয়, ‘আসামিদের এরূপ অনৈতিক ও অবৈধ সম্পর্কের কারণে বাদী ও তাঁর শিশু কন্যা মারাত্মকভাবে মানসিক বিপর্যস্ত হয়েছে। আসামিদের এমন কার্যকলাপে বাদীর চরমভাবে মানহানি হয়েছে, যা বাদীর জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।’