নিউমার্কেটের সংঘর্ষে তীব্র যানজট
রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী এবং নিউমার্কেট ও তার আশপাশের ব্যবসায়ীদের দফায় দফায় সংঘর্ষে সড়কে তীব্র যানযটের সৃষ্টি হয়েছে। বন্ধ রয়েছে নিউমার্কেট-নীলক্ষেত এলাকাসহ সাইন্সল্যাব দিয়ে যান চলাচল। এতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজে যেতে পারছেন না মানুষ। আর ওই এলাকার সব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমই প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। একান্ত প্রয়োজনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাঁরা সেদিকে গিয়েছেলেন, তাঁদের অনেকেই আহত হয়েছেন। অন্যদিকে ভয়ে দিন পার করছেন ওই এলাকার মানুষজন।
সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে নিউমার্কেট-নীলক্ষেত এলাকাসহ সাইন্সল্যাব দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে মিরপুর সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
যদিও জলকামান, টিয়ার সেল, রাবার বুলেট নিয়ে অ্যাকশনে নেমেছে পুলিশ। আর শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, ‘ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও রাজধানীর নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের মধ্যে চলমান সংষর্ষ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। খুব দ্রুত এ সংঘাত নিয়ন্ত্রণে আসবে।’
এদিকে ‘চলমান সংষর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ চরম ধৈর্যের সঙ্গে চেষ্টা করছে’ মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুতই আইনের আওতায় আনা হবে।’
এদিকে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আজ ভোর থেকে মিরপুর রোডে ব্যারিকেট দেওয়া হয়। সে সময় থেকে যান চলাচল চলাচল হয়ে যায়। এতে মিরপুর রোডসহ রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এতে অফিসগামী মানুষসহ সাধারণ যাত্রী ভোগান্তিতে পড়েছেন।
নিউমার্কেট এলাকায় গতকাল সোমবার রাতে শুরু হওয়া এ সংঘর্ষ আড়াই ঘণ্টায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সেসময় পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। পরে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফিরে গেলেও সেখানে বিক্ষোভ করেন।
আজ মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে ফের রণক্ষেত্রে পরিণত হয় নিউমার্কেট এলাকা। এ সময় কিছু শিক্ষার্থী কলেজ ক্যাম্পাসের বিপরীতের তেল পাম্পে অবস্থান নেন। ব্যবসায়ীরাও গাউসিয়া, ইস্টার্ন মল্লিকাসহ আশপাশের এলাকায় অবস্থান নেন।
রণক্ষেত্র নিউমার্কেট এলাকায় প্রথমে জলকামান নিয়ে নির্লিপ্ত অবস্থানে ছিল পুলিশ। বেলা ১২ টা ৫৬ থেকে জলকামান নিয়ে ঘটনাস্থলে আসতে দেখা যায়। এর প্রায় ৫০ মিনিট পর রাবার বুলেট ও টিয়ার সেল ছুড়তে শুরু করেছে তারা। একই সঙ্গে তাদের সঙ্গে এগোচ্ছে জলাকামান।
সে সময় আগুন জ্বালিয়ে টিয়ার গ্যাস থেকে বাঁচার চেষ্টা করেন সংঘর্ষকারীরা। একই সঙ্গে ইটপাটকেল, স্ট্যাম্প ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মুখোমুখি রাজধানীর নিউমার্কেট ও তার আশপাশের ব্যবসায়ী এবং ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এর আগেই সড়কের ডিভাইডারের ব্যারিকেট থেকে খুলে নেওয়া হয় লোহা। তবে কে বা কারা খুলেছেন সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সংঘর্ষ সৃষ্টিকারীরা চড়াও হচ্ছেন গণমাধ্যমকর্মীদের ওপরও। ছাড় পায়নি অ্যাম্বুলেন্সও। ভেঙে দেওয়া হয়েছে জানালার গ্লাস।
সব কিছু দেখে বেলা ১২টা ৫৬ মিনিটে ঘটনাস্থলে জলকামান নিয়ে আসতে দেখা যায় আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে। এর প্রায় পঞ্চাশ মিনিট পর মাঠে নামেন তারা।