নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন কুমিল্লার শ্রীপুর ইউপি চেয়ারম্যান
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় সম্প্রতি সন্ত্রাসী হামলার শিকার শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহজালাল মজুমদার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে দাবি করেছেন। হামলার পর অস্ত্র হাতে ভাইরাল সেই জুয়েল গ্রেপ্তার হলেও ‘শান্তিতে নেই’ বললেন তিনি। নিজ দলেরই এক প্রভাবশালী নেতার নির্দেশে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়ে পাঁচ মাস ধরে ঝুলছে তালা। ফলে জনগণের জন্য কাজ করতে হচ্ছে বাইরে থেকে। এমন অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বিচার প্রার্থনা করেছেন তিনি।
আজ বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান চৌদ্দগ্রামের শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজালাল মজুমদার।
শাহজালাল মজুমদার জানান, গত বছরের ডিসেম্বরে ইউপি নির্বাচনের আগে এক জনপ্রতিনিধি ফোন করে তাঁর (জনপ্রতিনিধি) আত্মীয়ের পছন্দের মেম্বারপ্রার্থী মনির হোসেনের নির্বাচনে সহযোগিতার কথা বলেন। মনির হোসেন নির্বাচিত না হওয়ায় তাঁরা যুবদলের ক্যাডার সন্ত্রাসী জুয়েলসহ স্থানীয় কিছু ব্যক্তির মাধ্যমে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করে।
একইসঙ্গে প্রকাশ্যে বিভিন্ন সভা সমাবেশে বক্তব্য দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে না যাওয়ার কথা বলা হয়। এমনকি, চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করার জন্য বারবার হুমকি দেওয়া হয়।
শাহজালাল বলেন, ‘এলজিএসপির প্রকল্প দাখিলের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা মেতাবেক ওয়ার্ড সভা বাধ্যতামূলক। সেই নির্দেশনা মেতাবেক ৯টি ওয়ার্ডে ৯টি ওয়ার্ড সভার তারিখ ও স্থান নির্ধারণ করলে কোনো ওয়ার্ড সভা করতে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দেয় ওই সন্ত্রাসী বাহিনী।’
সংবাদ সম্মেলনে শাহজালাল আরও বলেন, ‘গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জুয়েলের নেতৃত্বে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা লাঠিসোটা নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে চেয়ারম্যানের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়। যা এখনো পর্যন্ত তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। ওই দিন ইউনিয়ন পরিষদের না থাকায় আমি প্রাণে বেঁচে যাই। এর দুমাস পর আমার ওপর হামলা ও ব্যবহৃত ভাড়া করা প্রাইভেটকার ভাঙচুর করে তারা।’
শাহজালাল বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে ইউনিয়ন পরিষদে ঢুকতে না পেরে আমার বাড়িতে এবং বিভিন্নস্থানে বসে পরিষদের দৈনন্দিন কাজ এবং মানুষকে বিভিন্ন সেবা দিয়ে আসছিলাম। সর্বশেষ গত ১৪ জুলাই বেলা ৩টার সময় আমি একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষ বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় নালঘর বাজারে পৌঁছালে হঠাৎ জুয়েলের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমার ওপর হামলা চালায় এবং গাড়িচালক আমজাদ হোসেনকে মারধর করে। অথচ আমাকে প্রধান আসামি করে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মিথ্যা মামলা দেন।’
এমন অবস্থায় চেয়ারম্যান শাহজালাল নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দাবি করে তাঁর ওপর চালানো হামলা ও ডিজিটাল আইনে করা মিথ্যা অভিযোগের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রীসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে বিচার দাবি করেন।