নির্বাচনের পর ইশতেহার বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন সিপিডির
রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনি ইশতেহারের গুণগত উন্নতি হলেও নির্বাচন পরবর্তীতে কতটা বাস্তবায়ন হয়, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সেন্টার ফর পলিসি ডয়ালগ (সিপিডি)। তারা বলছে, জনগণ তাদের চাওয়া-পাওয়া সরকারের কাছে তুলে ধরার উপযুক্ত মাধ্যম খুঁজে পাচ্ছে না। এদিকে, আগামী নির্বাচনে আগে সরকারের অবশিষ্ট সময়ে নির্বাচনি ইশতেহার বাস্তবায়নে ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন অর্থনীতি ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
আজ শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘জাতীয় উন্নয়নে অঙ্গীকার শীর্ষক’ নাগরিক সম্মেলনে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে এসব তথ্য তুলে ধরে। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। প্রবন্ধে তিনি বিগত দিনে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনি ইশতেহারের পর্যালোচনা তুলে ধরেন।
মুক্ত আলোচনায় উঠে আসা মানুষের মতামত তুলে ধরে আজ অনুষ্ঠানে সিপিডি জানায়, বেশির ভাগ মানুষ বলেছেন, তাঁরা নিজেদের চাহিদা বা দাবি সরাসরি বা লিখিত আকারে প্রার্থীদের জানাতে পারেননি। তবে কেউ কেউ সরাসরি সংসদ সদস্যদের কাছে স্থানীয় সমস্যা নিয়ে কথা বলতে পেরেছেন।
পাশাপাশি মানুষ শিক্ষা খাতকে দুর্নীতি ও রাজনীতিমুক্ত, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি ও জনগণকে উদ্যোক্তা হতে উৎসাহিত করতে ঋণসংক্রান্ত জটিলতা দূরীকরণ, নারী-পুরুষের মজুরিবৈষম্য দূর করে নারীদের কাজের সুযোগ বাড়াতে শহর ও গ্রামে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপনসহ বিভিন্ন বিষয়ে মতামত জানিয়েছেন।
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘নির্বাচনের তিন দিন আগেও ইশতেহার করা হচ্ছে। অথচ ইশতেহার নির্বাচনের আগে আলোচনার মাধ্যমে এক বছর ধরে তৈরি হওয়া উচিত। ওই সব প্রক্রিয়া এ দেশে নেই। কারণ, এখানে নির্বাচনি ইশতেহার কথার কথা। সত্যিকারের নির্বাচন হলে ইশতেহারের গুরুত্ব থাকত। দলের গঠনতন্ত্রও কথার কথা। অথচ দলই দেশ চালাচ্ছে।’
তোফায়েল আরও বলেন, ‘এখন নির্বাচনের আগেও যোগাযোগ হয় না, পরেও হয় না। এখন নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় জনসংযোগের প্রয়োজন হয় না। নতুন সংস্কৃতি চালু হয়েছে, সংসদ সদস্যরা মুখের চেয়ে হাত-পা বেশি চালান। বিশেষ করে শিক্ষকদের ওপর।’
অনুষ্ঠানের সভাপতি সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘ইশতেহারের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের প্রতি তাদের রাজনৈতিক অঙ্গীকারের একটি ধারণা দেয়। ইশতেহার আইনগত দলিল না হলেও এর গুরুত্ব রয়েছে। ২০২৩ সালে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সিপিডির এ তথ্যগুলো নির্দেশনামূলক হতে পারে।’ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘উন্নয়নের জন্যে স্থিতিশীল পরিবেশ দরকার। এক্ষেত্রে ভোটাররা শান্তি চায়।’
মন্ত্রী জানান, নির্বাচনের সময়ে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের চাহিদাকে সমানভাবে জায়গা করে দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা থাকে ইশতেহার প্রণয়নে। বিভিন্ন স্তরের চাহিদার যোগসূত্র স্থাপন করাকে চ্যালেঞ্জিং বলেও অভিহিত করেন পরিকল্পনামন্ত্রী।