নির্বাচন নিয়ে দুই দলের অনড় অবস্থান বিপজ্জনক : সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, প্রধান দুই দলের অনড় অবস্থান দেশের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। তিনি ক্ষমতাসীন দলের প্রতি বিরোধী দলগুলোকে নির্বাচনে আনার আহ্বানও জানিয়েছেন।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আজ বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের (ইএমএফ) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি এ প্রত্যাশার কথা জানান। সোয়া ঘণ্টাব্যাপী ওই বৈঠকে নির্বাচন কমিশনাররা ও ইএমএফের ৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা আশা করি, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে একটা রাজনৈতিক সমঝোতা হবে। সবদলগুলো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। আমাদের বিভিন্ন দল থেকে বলা হয়েছে, তারাও বিশ্বাস করে যে একটা সমঝোতা হবে। আমরা আশাবাদী যে অবাধ নিরপেক্ষ উৎসবমুখর পরিবেশে ফলপ্রসূভাবে নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হবে।’
কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে স্বীকার করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘একই সাথে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে সকল রাজনৈতিক দল, প্রধানতম রাজনৈতিক দলগুলো যেন অবশ্যই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করে। কারণ নির্বাচনে যদি ইফেক্টিভ প্রতিদ্বন্দ্বিতা না হয় প্রত্যাশিত ভারসাম্য সৃষ্টি হবে না।’
নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে দুই দলের অনড় অবস্থান নিয়ে এক প্রশ্নে সিইসি বলেন, ‘এটি দেশের জন্য খুব বিপজ্জনক। যদি নির্বাচন এই অনড় অবস্থানে হয়, বড়দল পার্টিসিপেট না করে, আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে বলব, নির্বাচনের মূল ফলাফলের ওপর একটা ঝুঁকি থাকতে পারে। যেমন এটা নিয়ে একটা ল অ্যান্ড অর্ডার সিচুয়েশন ক্রিয়েট করা হলো। মানুষ বিপদগ্রস্ত হলো। আমরা চাই না, ওই ধরনের কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক। সেই জন্য আমরা বলব, প্রধানতম দল, সরকারে অধিষ্ঠিত দলের প্রতি আমার আহ্বান থাকবে, আপনারও আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে যান বিরোধীদলগুলোকে সঙ্গে নিতে। তারাও যেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে।’
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করতে হবে। বর্তমান সংবিধানে যেভাবে আছে আমাদের সেই অনুযায়ী চলতে হবে।’
ইএমএফের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, ‘আসলে এটা ছিল অনেকটা একাডেমিক ডিসকাশন। এখানে ওনারা আমাদের পরামর্শ দেন নাই। আমরাও পরামর্শ দেই নাই। আমরা গণতন্ত্রের চ্যালেঞ্জ ও সীমাবদ্ধতা নিয়ে আলোচনা করেছি। প্রতিনিধিদল আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন আমরা পর্যবেক্ষক ওয়েলকাম করি কি না। উই আর ভেরি ওয়েলকাম পর্যবেক্ষকদের সম্পর্কে। বিষয় হচ্ছে আমরা ট্রান্সপারেন্সি (স্বচ্ছতা) চাচ্ছি।’
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা যদি ট্রান্সপারেন্সি চাই তাহলে অবজারভার লাগবে। মিডিয়া লাগবে। মিডিয়া যদি সেখানে অবজেক্টিভলি রিপোর্টিং করে এবং অবজারভাররা থাকে, তাহলে সেখানে স্বচ্ছতা অনেক বেশি নিশ্চিত হতে পারে।’
বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল, নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর, রাশেদা সুলতানা, আনিছুর রহমান এবং ইএমএফ চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ আবেদ আলী, ইএমএফ সদস্য নেপালের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য আলহাজ তাজ মোহাম্মদ মিয়া, সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের (ভারত) বিশেষ প্রতিনিধি মিসেস স্বপ্না, ডুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ, সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান মজুমদার ও ড. আজাদুল হক ছিলেন।