নিষেধাজ্ঞা শেষে লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় নেমেছেন জেলেরা
ইলিশের প্রজনন মৌসুমে মার্চ-এপ্রিল দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে লক্ষ্মীপুরের অর্ধ-লক্ষাধিক জেলে মেঘনা নদীতে নামতে শুরু করেছেন। ইলিশ শিকার নিয়ে জেলেদের মধ্যে ফিরে এসেছে প্রাণচাঞ্চল্য।
দীর্ঘ দুই মাস পর নদীতে এবার ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ জালে ধরা পড়বে বলে জেলেরা আশা করছেন। এতে কিছুটা হলেও দুই মাসে মাছ শিকার করতে না পারার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন তাঁরা।
এদিকে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন জানালেন, আগামী দুই মাস চলবে জাটকা সংরক্ষণ অভিযান।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, মার্চ-এপ্রিল দুই মাস লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার মেঘনা নদী এলাকায় সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। আলেকজান্ডার থেকে হাইমচর সীমানা পর্যন্ত লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে মাছ শিকারে যাওয়ায় ১৩ জেলে বিভিন্ন মেয়াদে কারাগারে রয়েছেন। গত দুই মাসে ইলিশ শিকারে যাওয়ায় ১৯ মামলা দায়ের ও এক লাখ ৪৮ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এ সময় তিন মেট্রিক টন জাটকা জব্দ করে স্থানীয় এতিমখানা, মাদ্রাসা ও অসহায়দের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। জব্দকৃত সাত লাখ মিটার জাল আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
জেলেরা জানান, দীর্ঘ দুই মাস পর তারা নদীতে মাছ ধরতে যাননি। তবে এবার ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা পড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে। এতে কিছুটা হলেও লাভের মুখ দেখবেন তাঁরা।
আড়ৎদাররা জানান, একদিকে করোনা সংক্রমণ ও অন্যদিকে নিষেধাজ্ঞা থাকায় জেলেরা মার্চ-এপ্রিল দুইমাস নদীতে মাছ ধরতে যেতে না পারায়, তাদের আর্থিক সংকটে পড়তে হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা শেষ, মাছ ধরা শুরু হয়েছে। এতে তাদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। এবার নদীতে জেলেদের জালে মাছ ধরা পড়লে তারাও তাদের কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পাবরেন
লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন জানান, এবার ইলিশের উৎপাদন ২৫ হাজার মেট্রিকটন ছাড়িয়ে যাবে। নদীতে জেলেদের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও মে-জুন এ দুই মাস ১০ ইঞ্চির নিচে জাটকা শিকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকছে। এ সময়ও জেলেদের ৪০ কেজি করে খাদ্য সহায়তা দেবে সরকার। তবে ১০ ইঞ্চির নিচে জাটকা শিকার করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।