নিহত সহকর্মীর টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সহকর্মীর টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. শাহবুদ্দিন বেগ শাপলুর বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে পৌর ছাত্রলীগের প্রয়াত যুগ্ম আহ্বায়ক রিফাতের মা পারুল আক্তার আখাউড়া পৌরসভার মেয়র বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি তানজিল শাহ তচ্ছন, মো. ফয়সাল ও মো. আরিফ নামে আরও তিনজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে ওই অভিযোগে কী পরিমাণ টাকা ‘আত্মসাৎ’ করা হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত লেখা হয়নি।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, আখাউড়া পৌর এলাকার রাধানগরের মো. শাহ আলমের ছেলে রিফাত পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। টিঅ্যান্ডটি এলাকায় একটি জায়গা ক্রয়-বিক্রয় নিয়ে অভিযুক্তদের সঙ্গে মধ্যস্থতা হয় যে, লভ্যাংশের টাকা তারা সমবণ্টন করে নেবেন। কিন্তু রিফাতের মৃত্যুর পর তার টাকা না বুঝিয়ে দিয়ে টালবাহানা করা হয়। ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইব্রাহিম মিয়া সুজন এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করলে তার মাধ্যমেও টাকার কথা অস্বীকার করেন অভিযুক্তরা।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টিঅ্যান্ডটি এলাকার একটি জায়গা বিক্রি হলে রিফাতসহ অন্যরা সমবণ্টন পাবে বলে নিজেদের মধ্যে চুক্তি হয়। এরই মধ্যে রিফাত ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার চিনাইরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা যান। রিফাত মারা যাওয়ার পর তাঁর কুলখানিতে অনেক টাকা খরচ করা হয়েছে বলে প্রচার করতে থাকেন ছাত্রলীগনেতা শাপলুসহ অন্যরা। এরই মধ্যে শাপলু ওই টাকা খরচের দোহাই দিয়ে চাকরির বদলির তদবির করে লাখ লাখ টাকা কামিয়ে নেন। এসব কারণে রিফাতের কুলখানিতে টাকা খরচের বিষয়টি সামনে চলে আসে।
রিফাতের পরিবারের একাধিক সদস্য জানান, তাঁর একেবারে ঘনিষ্টজনরা নিজেরা কুলখানিতে টাকা খরচ করেন। কিন্তু জায়গা বিক্রির লভ্যাংশের টাকা পরিবারের কারো কাছে দেওয়া হয়নি। এমনকি কাউন্সিলরের মাধ্যমে টাকা চাওয়া হলে তাঁরা অস্বীকার করেন। এখন পর্যন্ত তারা রিফাতের পাওনার আনুমানিক সাত-আট লাখ টাকার মধ্যে এক টাকাও দেয়নি।
এ বিষয়ে আখাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহবুদ্দিন বেগ শাপলু বলেন, ‘যে অভিযোগটি উঠেছে—তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। কোনো রকম জায়গা কেনা-বেচার সঙ্গে আমি জড়িত ছিলাম না। ফয়সাল আমাকে শেয়ার থাকার কথা বললেও আমি তাতে যাইনি। যতটুকু জানি ফয়সাল লভ্যাংশের এক লাখ ৫৭ হাজার টাকা রিফাত মারা যাওয়ার আগে দিয়েছিল। তাদের প্রতি শেয়ারে লাভ হয়েছিল দুই লাখ টাকা করে। মূলত রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে একটি মহল রিফাতের পরিবারকে ফুসলিয়ে এসব করাচ্ছে।’
কাউন্সিলর ইব্রাহিম মিয়া সুজন বলেন, ‘পার্টনার হিসেবে রিফাত টাকা পাওনা আছে। অনেক চেষ্টা করেও এ টাকা আদায় করা যাচ্ছে না। একজন প্রয়াত সহকর্মীর টাকা নিয়ে তারা এমন কেন করল সেটা বুঝতে পারছি না।’