নিয়মের মধ্যেই হারিছ ও আনিসের সাজা মওকুফ : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
যথাযথ নিয়মের মধ্যেই দুই ভাই হারিছ আহমেদ ও আনিস আহমেদের সাজা মওকুফের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর মগবাজারে নজরুল শিক্ষালয়ে নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
যোগাযোগে সমন্বয়হীনতার কারণে রাষ্ট্রপতির ক্ষমার পরও পুলিশ সদর দপ্তরের ওয়েবসাইটে হারিছ আহমেদের নাম মোস্টওয়ান্টেডের তালিকায় রয়ে গেছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। দুই সহোদরের মুক্তির বিষয়ে কোনো গোপনীয়তা ছিল না বলে তিনি দাবি করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘৪০১ ধারায় যেকোনো অপরাধী কিংবা যারা সাজাপ্রাপ্ত, উভয়ক্ষেত্রেই তারা যদি মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে আপিল করে তিনি মওকুফ করতে পারেন কোর্টের কনসার্ন অনুযায়ী। এটা কমিউনিকেশন গ্যাপ, এটা ঠিক হয়ে যাবে।’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গোপন করার একটি বিষয় দেখা গেছে, এমন প্রশ্নে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘না, না কোনো হাইড (গোপন) করা নয়।’
মোহাম্মদপুরের ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমানকে ১৯৯৬ সালের ৭ মে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় হারিছ আহমেদ, আনিছ আহমেদ, তোফায়েল আহমেদ ওরফে জোসেফসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২০০৪ সালের ২৫ মে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে জোসেফ ও মাসুদ নামের এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। আর পলাতক আসামি হারিছ আহমেদ, আনিস আহমেদসহ তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মামলার নথি অনুযায়ী, বিচারিক আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে কারাগারে থাকা জোসেফ হাইকোর্টে আপিল করেন। হারিছ আহমেদ ও আনিস আহমেদ পলাতক থাকায় তাঁরা আপিলের সুযোগ পাননি। অবশ্য ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের শুনানি শেষে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ২০০৭ সালের ২০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে তোফায়েল আহমেদ জোসেফ ও আরেক আসামি কাবিলের সাজা বহাল রাখা হয়। কিন্তু মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মাসুদ খালাস পান।
হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন জোসেফ ও কাবিল। বর্তমান সরকারের সময় ২০১৫ সালের ৯ ডিসেম্বর রায় দেন আপিল বিভাগ। তাতে জোসেফের সাজা কমিয়ে মৃত্যুদণ্ড থেকে যাবজ্জীবন করা হয়। আর খালাস পান কাবিল। পরের বছর ২০১৬ সালে জোসেফের পক্ষ থেকে তাঁর মা সাজা মওকুফ চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেন। ২০১৮ সালে রাষ্ট্রপতি জোসেফের সাজা মওকুফ করে দেন এবং তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান। এই মামলায়ই ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ হারিছ আহমেদ ও আনিছ আহমেদের সাজা মওকুফ করে সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করে।