নেত্রকোনায় করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি, সীমান্তে বিজিবির কড়া নজরদারি
নেত্রকোনার সীমান্তবর্তী দুটিসহ বিভিন্ন উপজেলায় করোনা শনাক্তের হার বাড়ছে। দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মানুষ সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। তাদের দিন কাটছে করোনা আতংকে। সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত রোগীরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভিড় করছে।
জেলার দুর্গাপুর উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে কুল্লাগড়া ও দুর্গাপুর সদর ইউনিয়ন সীমান্তবর্তী হওয়ায় ওই এলাকার সাধারণ আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকজন নানা কাজে সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকায় নানা কাজে যায়। দেশের বর্তমান করোনার প্রেক্ষাপট এবং সীমান্তের ওপারে ভারতে মেঘালয় রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত রোগী বেশি থাকায় আতংকে রয়েছে এলাকাবাসী। ঝুঁকি নিয়ে আদিবাসী পল্লির মানুষকে কাজের সন্ধানে বের হতে হয়।
জেলায় গত রোববার করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয় ১৮ জনের। এর মধ্যে দুর্গাপুরেই আটজন। গতকাল সোমবার আক্রান্ত হয়েছে ১৩ জন। এতে কলমাকান্দায় রয়েছেন তিনজন।
জেলার সীমান্তবর্তী কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর ঘুরে দেখা গেছে, দুই উপজেলায় সাধারণ মানুষ সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। তারা অনেকেই স্থানীয় হাসপাতালে যেতে অনীহা প্রকাশ করে। নিজেরাই স্থানীয় বাজার থেকে ওষুধ কিনে খাচ্ছে।
কথা হয় দুর্গাপুরের ফারংপাড়ার ষাটোর্ধ্ব জামাল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘দুদিন হয় জ্বর দেখা দিয়েছে। বাজার থেকে প্যারাসিটামল কিনে খাইছি। এখন জ্বর কিছুটা কমের দিকে।’ সীমান্তের সেলিম, তাজুলসহ আরও কয়েজন একই ধরনের কথা বলেন।
কলমাকান্দার বড়ুয়াকোনা বিওপির দায়িত্বরত নায়েব সুবেদার হযরত আলী বলেন, ‘আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। ওপরের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করছি। সীমান্তের ওপার থেকে কোনো মানুষকে এপারে আসতে এবং এপার থেকে ওপারে যেতে দিচ্ছি না। অবৈধ চলাচলের বিষয়ে আমরা শুরু থেকেই কঠোর অবস্থানে রয়েছি।’
দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. তানজিরুল ইসলাম জানান, প্রতিদিন মানুষ উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জ্বর, সর্দি-কাশি ও গলাব্যথা নিয়ে আসে চিকিৎসার জন্য। চিকিৎসকরা জরুরি সেবা চালু রেখেছেন। আগতদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসাপত্র দিয়ে নিজ নিজ বাড়িতেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবস্থান করতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক কাজী মো. আবদুর রহমান জানান, করোনা প্রতিরোধে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। জনসাধারণের চলাচলেও সতর্কতা আরোপ করা হয়েছে। মানুষকে সচেতন করতে মাইকিং ও মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে। সীমান্ত এলাকায় মানুষের চলাচলে বিজিবির নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।