নেত্রকোনায় ৫ শতাধিক মণ্ডপে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি
কদিন বাদেই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এই উৎসবকে ঘিরে নেত্রকোনা জেলায় প্রস্তুতির কমতি নেই। চলছে প্রতিমা তৈরি। মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে গেইট ও প্যান্ডেলের কাজ। এদিকে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তৎপর রয়েছে প্রশাসন।
কাশফুলের পরশে মানুষকে যেন প্রাণচঞ্চল করে তুলছে বৃষ্টিভেজা শরৎ আকাশ। আর কয়দিন পরেই দেবী দুর্গা গজে চড়ে আসবেন পিত্রালয়ে। সঙ্গে আসবেন লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক আর গণেশ।
মহামারি ও সংকট অনেকটা কেটে যাওয়ায় এ বছর নেত্রকোনায় বেড়েছে দুর্গামণ্ডপের সংখ্যা। পাড়া-মহল্লায় প্রতিমা তৈরিতে দিনরাত ব্যস্ত কারিগররা। নিপুণ হাতে কাঠ, বাঁশ, বন ও মাটি দিয়ে তৈরি করছেন দেবী দুর্গার প্রতিমা।
নেত্রকোনা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক লিটন পণ্ডিত বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি থাকলেও দেবীকে বরণ করতে অপেক্ষার প্রহর গুণছেন আয়োজকরা। এ বছর জেলার ১০ উপজেলায় ব্যক্তিগত, স্থায়ী মন্দির ও অস্থায়ী মণ্ডপে ৫২৬টি দুর্গা পূজার আয়োজন করা হয়েছে।’
নেত্রকোনা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জ্ঞ্যানেশ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘নেত্রকোনা পৌরসভায় ৫৬টি, সদর উপজেলায় ৫৮টি, দুর্গাপুরে ৬১টি, মোহনগঞ্জে ৪৩টি, বারহাট্টায় ৫২টি, আটপাড়ায় ৩৯টি, মদনে ১৪টি, খালিয়াজুরীতে ৪২টি, কেন্দুয়ায় ৪৮টি, পূর্বধলায় ৫৮টি ও কলমাকান্দা উপজেলায় ৫৫টিসহ মোট ৫২৬টি মন্দির এবং মণ্ডপে পূজা উদযাপনের জন্য আয়োজন চলছে।’
প্রতিমা কারিগর নিখিল পাল বলেন, ‘আমরা কারিগররা অপেক্ষায় আছি কবে আসবে দুর্গাপূজা। এ বছর প্রতিমা তৈরিতে আনুষঙ্গিক ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় আমাদের বেশি লাভের আশা করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
পৌরসভার মেয়র আলহাজ নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপন উপলক্ষে পৌর শহরে যানবাহন নিয়ন্ত্রণে আমাদের স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। এ ছাড়া পূজা আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতা করবে পৌরসভা।’
পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমেদ বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সবসময় সতর্ক রয়েছে। বিশৃঙ্খলা এড়াতে এবং নিরাপত্তায় প্রতিটি মণ্ডপে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করার জন্য জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের বলা হয়েছে।’
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, ‘নিরাপদে ও শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা পালনের জন্য পুলিশের পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। পূজা উদযাপন কমিটির নেতাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন কমিটির মাধ্যমে জরুরি মুহূর্তে জেনারেটর রাখা, স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন, নারী-পুরুষ আলাদা লাইনে প্রবেশ ও বের হওয়ার ব্যবস্থা করা, ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে আজান ও নামাজের সময় বাজনা বন্ধ রাখা, প্রতিটি মণ্ডপে আগুন নিয়ন্ত্রক সিলিন্ডার রাখাসহ বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’