নেত্রীর ভালোবাসার কাঙাল হয়ে কাজ করে যাচ্ছি : আল-নাহিয়ান খান
করোনার মধ্যেও জননেত্রী শেখ হাসিনার ভালোবাসার কাঙাল হয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কাজ করে যাচ্ছে।নেতাকর্মীদের কোনো কাজে জন্য যেন নেত্রীর উন্নয়নের মহাসড়ক বাধাগ্রস্ত না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়ে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে কাজ করার শপথ নিতে নেতাকর্মীদের আহ্বান জানান বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয়।
ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এনটিভি অনলাইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারের এসব কথা বলেন আল-নাহিয়ান খান জয়। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন এনটিভি অনলাইনের স্টাফ করেসপনডেন্ট ফখরুল শাহীন।
এনটিভি অনলাইন : গৌরবান্বিত ইতিহাস নিয়ে ৭৫ বছরে ছাত্রলীগ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বপ্ন নিয়ে ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছেন তার কতটুকু বাস্তবায়ন হয়েছে বলে আপনি মনে করছেন?
আল-নাহিয়ান খান জয় : গৌরব, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যের ৭৪ বছরের ছাত্র সংগঠন। সেই সংগঠন ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সময়ের প্রয়োজনে গঠন করে। শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার জন্য এবং এ দেশের মানুষের পাশে থাকার জন্য এ সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। সে সময় থেকে আজ পর্যন্ত এ দেশের প্রত্যেকটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি ইতিহাসের পাতায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অবদান রয়েছে। আমরা বলতে চাই, ছাত্রলীগের যে ত্যাগ, শ্রম সে শ্রম আর ত্যাগের ইতিহাস যদি আমরা জানি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ একমাত্র সংগঠন যে সংগঠনটি বাংলাদেশের প্রত্যেকটি ইতিহাসের পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় রয়েছে। প্রত্যেক জায়গায় অবস্থান নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে।
এনটিভি অনলাইন : ছাত্রলীগের যে ঐতিহ্য রয়েছে, সেটি হারাতে বসেছে বলে অনেকে মনে করে, এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?
আল-নাহিয়ান খান জয় : বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ঐতিহ্য কখনও হারাতে পারে না। কারণ গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস আছে ছাত্রলীগের। সে ইতিহাসের ধারক ও বাহক হিসেবে ছাত্রলীগ সবসময়ই তার জায়গায় অবিচল। কিন্তু কিছু সময় আমরা দেখেছি কিছু বিশৃঙ্খল ঘটনা, অনাকাঙ্ক্ষিত দু-একটি ঘটনার কারণে আপনারা অনেকসময় ছাত্রলীগকে দোষারোপ করেন। কিন্তু এ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যারা ঘটিয়েছে, তাদের কিন্তু আমরা কোনো ছাড় দিইনি। তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি এবং ছাত্রলীগ সব সময়ের মতই যে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস সে ইতিহাসের ধারক ও বাহক হিসেবে তার ঐতিহ্য নিয়ে বীরদর্পে এগিয়ে যাচ্ছে।
এনটিভি অনলাইন : বর্তমান সময়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কেন ছাত্রলীগে আসবে?
আল-নাহিয়ান খান জয় : আপনারা জানেন ছাত্রলীগের প্রত্যেকটা নেতাকর্মী শিক্ষার্থী এবং আমাদের প্রথম পরিচয় হচ্ছে শিক্ষার্থী। তাই সাধারণ ও অসাধারণ এমন কোনো কিছু সংজ্ঞায়িত আমি করতে চাই না। আমি শুধু একটি কথা বলব, শিক্ষার্থীরা এ সংগঠন ভালোবাসে। আমাদের ৫০ লাখ নেতাকর্মী সংগঠনকে ভালোবাসে, জাতির পিতার স্বপ্নকে আঁকড়ে ধরে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে এ সংগঠন কাজ করে যাচ্ছে। তাই আমি বলব, ছাত্রলীগের যে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে সে ইতিহাস যদি কেউ জানতে পারে তবে তরুণ সমাজ অবশ্যই ছাত্রলীগের পতাকাতলে আসবে। প্রত্যেকটি শিক্ষার্থী বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে এ সংগঠন করবে বলে আমি মনে করি।
এনটিভি অনলাইন : প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এ দিনে এসে অনেকে সম্মেলনের দাবি করছে বা অনেকে বলছে আপনাদের মেয়াদ শেষ। সম্মেলনের দাবির বিষয়ে আপনি কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন?
আল-নাহিয়ান খান জয় : আমরা একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পর দায়িত্ব পেয়েছিলাম। আপনারা জানেন ছাত্রলীগের একমাত্র অভিভাবক জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। তিনি নির্দেশনা দেবেন কবে সম্মেলন হবে। নির্দেশনা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা গণমাধ্যমে জানিয়ে দিব। সে সম্মেলনে আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকেন। তাই সম্মেলনের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ হলে আপনাদের জানিয়ে দিব। আমরা আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। সময় হলে আমরাই আপনাদের জানাব।
এনটিভি অনলাইন : একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পর যে আশা নিয়ে আপনাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সেটা কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পেরেছেন বলে আপনার মনে হয়?
আল-নাহিয়ান খান জয় : দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে একটা চেলেঞ্জিং সময় ছিল। আমরা যখন দায়িত্ব পাই সব কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল। এত বড় একটি সংগঠন পরিচালনা করার জন্য আমি এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য কাজ করেছি। সে কাজ করার একটিই কারণ, সেটা হচ্ছে জাতির পিতার যে স্বপ্ন এ সংগঠন নিয়ে সে অনুযায়ী আমরা পরিচালনা করেছি। আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা যে নির্দেশনা দিয়েছেন, আমরা তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে ছাত্রলীগকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমি বলব, আমরা আমাদের কার্যক্রম সুন্দরভাবে করার চেষ্টা করছি। করোনার সময়ে দেখেছেন ছাত্রলীগের কর্মীরা কীভাবে জীবনের বাজি রেখে কাজ করে গেছে। তারা পরিবারকে পাশে রেখে মানুষ ও শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে কাজ করে গেছে। আমরা কতটা সফল ও ব্যর্থ সেটা সময়ই বলবে, আপনারা বলবেন।
এনটিভি অনলাইন : ইতিহাস ও ঐতিহ্য ফিরে পেতে আপনাদের আগামী দিনের কর্ম পরিকল্পনা কী?
আল-নাহিয়ান খান জয় : বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সবসময় ইতিহাস ও ঐতিহ্য ধরে রেখে কাজ করে গেছে। আমি আপনাকে আবারও বলতে চাই ছাত্রলীগ তার আদর্শের, ঐতিহ্যের জায়গায় কখনও ছাড় দেয় না। কিন্তু কারও ব্যক্তিগত কারণে কেউ সংগঠনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছে, সেখানে সংগঠন কখনও দায়ভার নেবে না। ব্যক্তিগতভাবে তাঁকে দায়ভার নিতে হবে।
এনটিভি অনলাইন : নেতাকর্মীদের জন্য আপনার কোনো বক্তব্য আছে কি না?
আল-নাহিয়ান খান জয় : বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জাতির পিতার আদর্শ বাস্তবায়ন করার জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাচ্ছে। নিঃস্বার্থ কর্মীরা তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত যারাই আছে সবাই আমরা আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভালোবাসার কাঙাল হয়ে কাজ করে যাচ্ছি। সবার উদ্দেশে একটা কথাই থাকবে আমাদের নেতাকর্মীরা কষ্ট করে, নিজের জীবন বাজি রেখে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। সে কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় সবার ভিতরে থাকবে। একটি কথা মনে রাখবেন, আমাদের কোনো কাজের জন্য যেন আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রীর এ উন্নয়নের মহাসড়ক যেন বাধাগ্রস্ত না হয়। সে দিক বিবেচনা করে প্রত্যেক নেতাকর্মী বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে যাবে, এ প্রত্যয় ব্যক্ত করছি।