নোয়াখালীর স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় বিভিন্ন মন্দিরে হামলা ও সহিংসতার ঘটনায় জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সহসভাপতি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস-চেয়ারম্যান বরকত উল্লা বুলুসহ বিএনপি-জামায়াতের ১৫ নেতার সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে নিজ সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম।
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ গৌর নিত্যানন্দ বিগ্রহ (ইসকন) মন্দির, রাম ঠাকুর চন্দ্র আশ্রম মন্দির, রাধামাধব জিউর মন্দিরসহ বিভিন্ন মন্দিরে হামলা ও সহিংসতার ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল ইনাম কমলকে (৩৯)। পরে গতকাল সোমবার রাতে তিনি সেই মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে এ ঘটনায় বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস-চেয়ারম্যান ও নোয়াখালী-৩ আসনের সাবেক সাংসদ বরকত উল্লা বুলুসহ বিএনপি-জামায়াতের ১৫ নেতার সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, ১৫ অক্টোবর নোয়াখালীর চৌমুহনীতে কয়েকটি মন্দির ও মণ্ডপে দফায় দফায় হামলা-ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় মোট ২৬টি মামলা হয়। এসব মামলায় প্রায় ২০০ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। এর মধ্যে ফয়সালসহ বিএনপি-জামায়াতের ১১ নেতাকর্মীকে উসকানি দেওয়ার অভিযোগে গত রোববার গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের বেগমগঞ্জ মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন নোয়াখালীর সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়ন ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সুমন, বিএনপি কর্মী ইউছুফ, হাতিয়া পৌর বিএনপির প্রচার সম্পাদক ছেরাজুল হক বেচু, চৌমুহনী করিমপুর এলাকার ইমরান হোসেন নিশান, রনি, হাজীপুর এলাকার আক্তারুজ্জামান, সোনাইমুড়ীর রশিদপুর গ্রামের রবিউল হোসেন ও লক্ষ্মীপুর সদরের সাহেদুল ইসলাম।
পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তারকৃত ফয়সাল ইনাম কমলকে গতকাল সোমবার রাতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। পরে বিচারক ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। জবানবন্দিতে কমল চৌমুহনীতে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনার উস্কানিদাতা হিসেবে বরকত উল্লা বুলুসহ বিএনপি-জামায়াতের ১৫ জন নেতার সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন। কমল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার উদ্দেশে কুমিল্লার ঘটনার পর থেকে ফেসবুকে বিভিন্ন ভিডিও আপলোড করাসহ উসকানিমূলক পোস্ট দেন। কমলকে এ ঘটনার উস্কানিদাতা ও ইন্ধনদাতা হিসেবে চিহ্নিত করে সোমবার তার বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়।
এদিকে, এ ঘটনায় আরও আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে লুণ্ঠিত দুই হাজার ৫০০ টাকা।