নৌবাহিনীর সাবেক সদস্যের র্যাব পরিচয়ে প্রতারণা, র্যাবের হাতেই ধরা
অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০২০ সালে নৌবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন নাজমুল হোসেন ও নাহিদ হাসান। পরে নিজেরা গড়ে তুলেছিলেন র্যাবের একটি ভুয়া দল। সঙ্গে যুক্ত করেন আরও তিনজনকে। প্রতারণা করতে নিজেরা বানিয়ে নেন র্যাবের পোশাক।
মানুষকে ভয় দেখাতে সঙ্গে রাখতেন খেলনা পিস্তল ও নৌবাহিনীর পোশাক। চক্রটির বিরুদ্ধে অভিযোগ, র্যাব পরিচয়ে এর সদস্যারা মানুষের জমি সংক্রান্ত বিরোধ মেটানো, বাড়ি দখল করা, টেন্ডার পাইয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে ডাকাতি পর্যন্ত করতেন।
আজ মঙ্গলবার ভোরে গাজীপুরের কুনিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রটির হোতাসহ পাঁচজনকে আটকের পর এসব বিষয় জানতে পারে র্যাব। দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।
মঙ্গলবার ভোরের অভিযানে আটকদের কাছ থেকে দুটি খেলনা পিস্তল, পিস্তলের কভার, র্যাব লেখা দুটি জ্যাকেট, র্যাবের চারটি ভুয়া আইডি কার্ড, নৌবাহিনীর একটি পোশাক, একটি চাকু ও পাঁচ লাখ টাকার একটি চেকও উদ্ধার করা হয়।
আটকরা হলেন নৌবাহিনী থেকে বহিষ্কৃত ও এই দলের মূলহোতা নাজমুল হোসেন ও নাহিদ হাসান। দলের অন্য সদস্যরা হলেন তাজুল ইসলাম, সুমন মিয়া এবং সুচিত্র রবিদাস।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল্লাহ আল মোমেন জানান, চক্রের সদস্যরা নিজেদের র্যাব পরিচয়ে সাধারণ মানুষকে ভয়-ভীতি দেখাতেন। বিশেষ করে টাকার বিনিময়ে সাধারণ মানুষকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন বিচার সালিশের রায় নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসতেন। চক্রটি জমি ও টাকা উদ্ধার, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি খাতের টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করছিলেন। এ ছাড়া র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সদস্য পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের জমি জায়গা, আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত অভিযোগের সমাধানের নাম করে ভুয়া স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিতেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে র্যাব-১-এর অধিনায়ক বলেন, ‘সকালে আটক করায় তাদের সেভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি। প্রতারক চক্রটির দুজন নৌবাহিনী থেকে গত বছর চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন। এই দলের বাকি সদস্যরা আগে থেকেই বিভিন্ন প্রতারণার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাদের কাছ থেকে যে টেন্ডারের কাগজ পেয়েছি সে বিষয়ে জানতে পেরেছি- সাধারণ মানুষকে টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার নামে আশ্বস্ত করছিলেন এবং টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন। এ ছাড়া প্রতিনিয়ত র্যাব পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করে আসছিলেন বলে আমরা জানতে পেরেছি।’