নড়াইল সদর হাসপাতালে রোগীর স্বজন লাঞ্ছিত
নড়াইল সদর হাসপাতাল সম্পর্কে নানা অনিয়ম ও অভিযোগ অনেক আগে থেকেই। এরই মধ্যে সাংসদের কাছে অভিযোগ দেওয়ায় গত রোববার হাসপাতালের আয়া এক রোগীর স্বজনকে লাঞ্ছিত করে হাসপাতাল থেকে বের করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এর আগে গত শনিবার সকালে হঠাৎই নড়াইল সদর হাসপাতাল পরিদর্শনে যান সাংসদ মাশরাফি বিন মোর্তজা। এ সময় তিনি হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে শুরু করে অফিস কক্ষ ঘুরে দেখেন। রোগীদের কাছ থেকে হাসপাতাল সম্পর্কে নানা অভিযোগ ও অনিয়মের কথা জানতে শুনেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,সদর উপজেলার বাসগ্রামের মিনারুল মোল্লার ১৫ মাসের মেয়ে রোকাইয়া ডায়রিয়াজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। ওই দিন মাশরাফি ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গেলে রোকাইয়ার দাদি তাহমিনা খানম মাশরাফিকে কাছে পেয়ে হাসপাতালের নানা অনিয়ম এবং দুর্নীতির কথা তুলে ধরেন।
রোকাইয়ার দাদি তাহমিনা বেগম অভিযোগ করে বলেন,গত রোববার দুপুরে হাসপাতালের এক আয়া ওয়ার্ডে এলে তাকে বলি ভাত দাও। তখন ওই আয়া চিৎকার করে বলেন তোর নাম নেই,তোরে ভাত দেওয়া যাবে না। তখন আমি বলি, সব রোগী দুপুরের আগেই বাড়ি চলে গেছে। তাদের একজনের খাবার দিলে কী হবেনে? তখন ওই আয়া বলেন, যেমন কুকুর তেমন মুগুর না দিলি ঠিক হবেনানে। এ কথার প্রতিবাদ করলে সে আমার চুলের মুঠি ধরে পায়ের স্যান্ডেল দিয়ে মারিছে।
তাহমিনা বেগম আরও বলেন,এমপি মাশরাফি হাসপাতালে এলে আমি তাকে বলেছিলাম হাসপাতালে ময়লা থাকে,ডাক্তাররা ঠিকমতো আসে না,সেবা পাওয়া যাচ্ছে না। ওষুধ,খাবার দেয় না। এসব কথা বলায় আমারে তারা জুতাপেটা করছে।
ডায়রিয়া ওয়ার্ড সূত্রে জানা গেছে,ওই দিন দুপুরে ছয় শয্যার ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি ছিল ২৪ জন। সেখানে ১১ জনকে দুপুরের খাবার দেওয়া হয়। তার মধ্যে রোকাইয়ার পরিবারের কারোর নাম ছিল না।
এর আগে সঠিক সময়ে কর্মস্থলে না আসায় হাসপাতালের আটজন চিকিৎসক এবং দুজন প্যাথলজিস্টকে শোকজ করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আসাদ-উজ-জামান মুন্সী বলেন,চিকিৎসক-কর্মচারীদের সকাল ৮টায় হাসপাতালে আসার কথা। কিন্তু গত শনিবার সকাল ৯টার পরে আসায় আটজন চিকিৎসক,দুজন মেডিকেল প্যাথলজিস্টকে শোকজ করা হলেও সাংসদ মাশরাফি বিন মোর্তজা পরের দিন বিকেলে হাসপাতালে এসে শোকজপত্র প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত,এর আগেও সাংসদ মাশরাফি ২০১৯ সালের ২৫ এপ্রিল সদর হাসপাতালে আকস্মিক পরিদর্শনে এসে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরসহ বিভিন্ন অনিয়ম দেখে কয়েক চিকিৎসককে শোকজ এবং বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। এদিকে বর্তমানে নড়াইল সদর হাসপাতালে ৩৯টি চিকিৎসকের পদ থাকলেও কর্মরত আছেন ২৯ জন।