পঞ্চগড়ে ঘটনার ৮ দিন পর পুলিশ সুপারের সংবাদ সম্মেলন
পঞ্চগড়ে আহমদিয়া মুসলিম জামাতের সালানা জলসাকে কেন্দ্র করে বাড়ি-ঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ ঘটনার আট দিন পর সংবাদ সম্মেলন করেছেন পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা। আজ বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) দুপুরে তিনি তাঁর সভাকক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলন পুলিশ সুপার দাবি করেন, একটি প্রশিক্ষিত দল এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এটি ছিল একটি পরিকল্পিত ঘটনা। আগুন জ্বালানোর জন্য ছিল গান পাউডার ও পেট্রল। প্রাণহানি এড়াতে ঘটনার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে। তাৎক্ষণিক অ্যাকশনে গেলে প্রাণহানি বাড়ত এবং এ ঘটনা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ত।
পুলিশ সুপার জানান, সালানা জলসায় আট হাজারের বেশি আহমদিয়া সদস্য অবস্থান করছিল। চার পাশ থেকে সাত-আট হাজার মানুষ আক্রমণ চালায়। এ সময় পুলিশের ১৭০ জন, র্যাবের ৬৪ জন এবং পাঁচ প্লাটুন বিজিবি সদস্য দায়িত্ব পালন করেন। ইতোমধ্যে ১৩টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে পঞ্চগড় সদর থানায় ১১টি ও বোদা থানায় দুটি। ১৩টি মামলায় এ পর্যন্ত ১৬৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ১৩টি মামলার মধ্যে পুলিশ বিশেষ ক্ষমতা আইনে চারটি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেছে। অন্য মামলাগুলো ক্ষতিগ্রস্তরা করেছেন। এসব মামলায় নাম-ঠিকানা উল্লেখ করা ছাড়াও ১০ থেকে ১১ হাজার অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। আরও মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘যারা ঘটনায় জড়িত তারাই আতঙ্কে থাকবে। সাধারণ মানুষের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। আমাদের কাছে ঘটনার পর্যাপ্ত ভিডিও ও সিসিটিভি ফুটেজ এবং স্টিল ছবি আছে। এসব দেখে গোয়েন্দাদের তথ্যের ওপর খোঁজ-খবর নিয়েই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার দাবি করেন, পুলিশের তৎপরতার কারণে হামলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমানো সম্ভব হয়েছে। আর এ ঘটনায় করা কোনো মামলায় কোনো সাধারণ মানুষজনকে হয়রানি করা হচ্ছে না।
পুলিশ সুপার বলেন, সারা দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য একটি স্বার্থান্বেষী মহলের উসকানিতে পঞ্চগড়ে যে বর্বরোচিত নাশকতার কাণ্ড ঘটানো হয়েছে, সেই ঘটনায় পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আহত হয়েছেন। হামলা করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ট্রাফিক পুলিশ অফিস। হামলাকারীরা একজন বৃদ্ধ পুলিশ সদস্যকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছে। বর্তমানে পঞ্চগড়ের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই পুলিশ সুপার স্পর্শকাতর এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন না করতে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) এস এম শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রাকিবুল ইসলাম, পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিঞাসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও জেলায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীরা।