পঞ্চগড়ে নৌকাডুবিতে নিহত বেড়ে ২৯
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের আউলিয়ার ঘাট এলাকায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবিতে শিশু, নারীসহ নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৯ জনে দাঁড়িয়েছে। প্রায় নিখোঁজ রয়েছে অর্ধশত। নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু ও নারী উদ্ধার করা হয়েছে।
পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক শেখ মোহাম্মদ মাহবুবুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আজ সোমবার সকালে উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে। নদীপাড়ে নিখোঁজদের স্বজনসহ স্থানীয়রা ভিড় জমিয়েছে।
জেলার বোদা উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের বরদেশ্বরী মন্দিরে (নদীর অপরপাড়ে) মহালয়া উপলক্ষে এক ধর্মসভার আয়োজন করা হয়। এই ধর্মসভায় যোগ দিতে জেলার বোদা ও দেবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার লোকজন শ্যালো মেশিনচালিত নৌকাযোগে যাচ্ছিল। দুপুরের দিকে নদীর মাঝপথে অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে নৌকাটি উল্টে গিয়ে ডুবে যায়। সাঁতার জানা যাত্রীরা তীরে উঠে আসতে পারলেও সাঁতার না জানা নারী ও শিশুরা পানিতে ডুবে যায়। তাদের চিৎকারে এলাকার লোকজন ছুটে এসে অনেককে উদ্ধার করে। পরে জেলা, উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসন এবং ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়।
মহালয়া উপলক্ষে এদিন অধিক মানুষের সমাগম ঘটে। চারটি নৌকা পারাপারের জন্য চলাচল করলেও অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে বিপুল সংখ্যক মানুষ নদী পার হতে অপেক্ষায় থাকে। ফলে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী নৌকায় উঠলে মাঝ নদীতে নৌকা ডুবে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার সাথে সাথে উপস্থিত জনতা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে উদ্ধার অভিযান চালায়। দুর্ঘটনা কবলিত নৌকাটিতে প্রায় দেড়শজন যাত্রী ছিল বলে জানা গেছে। উদ্ধারকারীরা অনেককে জীবিত উদ্ধার করলেও পরে রাতে ২৫ জন এবং আজ সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ পাঁচ জন মিলে মোট ২৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করে। তবে মৃত ব্যক্তিদের সবার নামপরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।
জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম তাৎক্ষণিভাবে বেশ কিছু শিশু ও নারী মারা যাওয়ার কথা জানান। ফায়ার সার্ভিসের অভিযান শেষ হলে প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা জানানো যাবে। তিনি নৌকাটিতে অতিরিক্ত যাত্রী ছিল বলে জানিয়েছেন। মৃত ব্যক্তি সৎকারের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যেককে ২০ হাজার এবং আহতদের প্রত্যেককে ১০ হাজার করে টাকা প্রদানের ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক।