পটুয়াখালীতে কলেজছাত্রকে অপহরণ, জোরপূর্বক বিয়ে!
পটুয়াখালী সরকারি কলেজের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ছাত্র নাজমুল আকনকে (২৩) অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে ইশরাত জাহান পাখি (২৫) নামে এক তরুণীর বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় গত ৩ অক্টোবর নাজমুল বাদী হয়ে পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমিরুল ইসলামের আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় ইশরাত জাহান পাখিসহ আরও অজ্ঞাত পরিচয় ছয়-সাতজনকে আসামি করা হয়েছে। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পটুয়াখালী সদর থানাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলা দায়েরের পর ১৫ অক্টোবর দুপুরে ওই তরুণী নিজেকে স্ত্রী দাবি করে মির্জাগঞ্জে নাজমুলের বাবার বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। এ ঘটনায় মির্জাগঞ্জে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
নাজমুল মির্জাগঞ্জ উপজেলার মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের জালাল আকনের ছেলে ও ইশরাত জাহান পাখি একই উপজেলার গাজিপুরের মো. আউয়ালের মেয়ে।
নাজমুলের আইনজীবী আল নোমান জানান, তার মক্কেল নাজমুল পটুয়াখালী সরকারি কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের নিয়মিত ছাত্র এবং তিনি সরকারি কলেজের হোস্টেলে থাকেন। আসামি ইশরাত জাহান পাখি দীর্ঘদিন ধরে নাজমুলকে মোবাইল ফোনে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রেমের প্রস্তবসহ বিয়ের প্রলোভন দেখান। কিন্তু নাজমুল রাজি না হওয়ায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর পটুয়াখালী লঞ্চঘাট এলাকা থেকে নাজমুলকে চোখ বেঁধে অপহরণ করা হয়। পরে ২৮ সেপ্টেম্বর অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে সাত-আটজন ব্যক্তি বলপূর্বক তাকে একটি নীল কাগজে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেন। ধারণা করা হচ্ছে ওই কাগজ দিয়ে তারা একটি কাবিননামা তৈরির পাঁয়তারা করছেন। এ ঘটনায় আমরা আদালতে মামলা দায়ের করেছি। আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে নাজমুলকে অপহরণ এবং জোরপূর্বক বিয়ে করার একটি ভিডিও ফুটেজ আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি কক্ষে ইশরাত জাহান পাখি, আর বাম পাশে নাজমুল বসে আছেন। পেছন থেকে নাজমুলের মাথার দুই দিক থেকে এক ব্যক্তি ধরে রেখেছেন। সেখানে আরও কয়েকজনের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। এ সময় পাখিকে নীল কাগজে স্বাক্ষর করতে দেখা গেছে। স্বাক্ষর গ্রহণের পর নাজমুলকে মিষ্টি খাইয়ে দিলে নাজমুল তা মুখ থেকে ফেলে দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত নারী ইশরাত জাহান পাখি দাবি করেন, নাজমুলের সঙ্গে তার দীর্ঘ দুই বছর প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং নাজমুল স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছেন। এখানে অপহরণ কিংবা জোরপূর্বক বিয়ে করার যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এ কারণে বর্তমানে তিনি নাজমুলের বাড়িতে অবস্থান করছেন।
পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান জানান, আদালতের নির্দেশে মামলা নেওয়া হয়েছে। তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।