পরিস্থিতি বিবেচনায় আবারও কঠোর লকডাউন হতে পারে : ওবায়দুল কাদের
মানুষের জীবন ও জীবিকার স্বার্থে সরকার লকডাউন শিথিল করলেও পরিস্থিতি বিবেচনায় আবারও কঠোর লকডাউন দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মন্ত্রী আজ সোমবার সকালে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কের পণ্য পরিবহণের উৎসমুখে এক্সেল নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন শীর্ষক প্রকল্পের পূর্ত কাজ দুটি বাস্তবায়নে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর এবং নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের মধ্য চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে একথা বলেন।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী, বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আবদুল্লা আল মামুন এবং নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাসহ অন্য কর্মকর্তারা।
দেশের সড়ক-মহাসড়কে এতো উন্নয়ন হচ্ছে, নেওয়া হচ্ছে একাধিক প্রকল্প, তবু মহাসড়কে শৃঙ্খলা না ফেরায় মন্ত্রী এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়ে বলেন, যে কোনও মূল্যে সড়কে-মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে।
গণপরিবহণ চলাচলে করোনা পূর্ববর্তীকালে যে ভাড়া ছিল সে ভাড়ায় চলবে, বর্ধিত ভাড়ায় নয় উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এবং জনস্বার্থে সব স্টেকহোল্ডার ও সব মালিক-শ্রমিকের সহযোগিতা কামনা করেন।
মন্ত্রী পরিবহণ চলাচলের আগে গাড়ি জীবাণুমুক্ত, পরিষ্কার করার নির্দেশনা দিয়ে বলেন, যাত্রীদের শতভাগ মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে। তিনি এ বিষয়ে বিআরটিএকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।
সড়ক নির্মাণ করতে হবে কাজের শতভাগ গুণগত মান বিবেচনায়, যেসব ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজের মান ভালো করে না এবং একই প্রতিষ্ঠান একাধিক কাজ ভাগিয়ে নেয়, সেসব প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করতে হবে। পাশাপাশি কিছু সংখ্যক প্রকৌশলীকেও দোষারোপ করেন ওবায়দুল কাদের।
গণটিকা কর্মসূচিতে জনগণের ব্যাপক সাড়া দেখে কাণ্ডজ্ঞানহীন সমালোচনা প্রকৃতপক্ষে বিএনপি নেতা-কর্মীদের গণহতাশার বহিঃপ্রকাশ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, এ নিয়ে বিএনপি কর্মীদের চেয়ে তাদের নেতারাই বেশি হতাশাগ্রস্ত।
গণটিকা লোক দেখানো নয়, ভ্যাকসিন গ্রহণে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ততা বিএনপি নেতারা চোখ খুলে দেখলেই দেখতে পাবে বলে জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বিএনপিকে শেখ হাসিনার জনকল্যাণমুখী রাজনীতি থেকে শিক্ষা গ্রহণের আহ্বান জানান।
জনগণের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘ডিপ অ্যান্ড এবাইডিং কমিটমেন্ট’ থেকে বিএনপি চাইলে অনেক কিছুই শিখতে পারতো উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কিন্তু ইতিহাসের নির্মম সত্য হচ্ছে বিএনপি ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি।
ওবায়দুল কাদের রক্তাক্ত ষড়যন্ত্রে বিএনপির অতীত কলংকিত বলেও মন্তব্য করেন।
অল্প সময়ের ব্যবধানে সরকার প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভ্যাকসিন সংগ্রহে সফল হবে, বিএনপি ভাবতেই পারেনি জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা ভেবেছিল টিকা পেতে বছরের পর বছর লেগে যাবে।
পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন মজুদ নিয়ে সরকার সফলভাবে গণটিকা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ায় বিএনপির সহ্য হচ্ছে না উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা অন্তর্দহনে দগ্ধ হচ্ছে। এমনিতেই আগস্ট মাস এলে বিএনপির অতীতের রক্তাক্ত বিশ্বাসঘাতকতায় অন্তর্জ্বালায় ভোগে। ভ্যাকসিন নিয়ে সরকারের সাফল্যে বিএনপির অস্থিরতা এবং মর্মযন্ত্রণা বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ, তাইতো তারা আবোল-তাবোল বকছে বলে মনে করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জনগণের সঙ্গে প্রতারণা আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনা কখনো করে না, করবেও না। বিএনপির দলীয় প্রধানের একাধিক ভুয়া জন্মদিন পালন করে নিজেরাই এখন জনগণের কাছে প্রতারক হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে।
জনগণের প্রতি বিএনপির যদি ন্যূনতম দায়িত্ববোধ থাকত তাহলে অন্তত টিকাদানের সময় সরকারের সমালোচনা বন্ধ করে মানুষের পাশে দাঁড়াতো উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, অবশ্য তাদের অব্যাহত মিথ্যাচার আর জনবিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে জনরোষের স্বীকার হওয়ার আশঙ্কা থেকেই নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করছে।
ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের বলেন, রাজনীতি মানে সব কিছু নিয়ে মিথ্যাচার নয়, অন্ধ সমালোচনা নয়।
অকপটে সত্য উচ্চারণের সাহস রাজনৈতিক দলের থাকতে হয় কিন্তু বিএনপি অব্যাহত মিথ্যাচার চর্চায় সেটিও হারিয়ে ফেলছে বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।