পরী মণিকে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি সাংসদ হারুনের
ঢাকাই সিনেমার আলোচিত চিত্রনায়িকা পরী মণিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপিদলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ। জাতীয় সংসদে আজ সোমবার এক আলোচনায় এই দাবি জানান তিনি।
এ সময় সাংসদ হারুন বলেন, ‘আজ আমি মাননীয় স্পিকারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করব, সত্যিকার অর্থেই যে বিষয়গুলো রাষ্ট্রের জন্য বিরাট আকারে সরকারকে নাড়া দিচ্ছে, সেই বিষয়গুলোতে দৃষ্টি দেবেন। পরী মণি বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত শিল্পী। তিনি যে ঘটনার শিকার হয়েছেন—চার দিন ধরে তিনি বিচারপ্রার্থী, কিন্তু বিচার পাচ্ছেন না। তিনি কি অসত্য মাননীয় স্পিকার? আমি বিষয়টির দৃষ্টি আকর্ষণ করলাম।’
সাংসদ হারুন আরও বলেন, ‘সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নেই। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে। গতকাল সব গণমাধ্যমে এটি নিয়ে প্রচার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আমার আর কী বলার আছে?’
এদিকে, চিত্রনায়িকা পরী মণিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সাভার মডেল থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলায় উত্তরা ক্লাবের সাবেক প্রেসিডেন্ট নাসির ইউ মাহমুদসহ (নাসিরউদ্দিন মাহমুদ) ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে চারজন অজ্ঞাত আসামি বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার বাদী পরী মণি নিজে।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মাইনুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে আজ সোমবার পরী মণির মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘মোট ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছে। নাসিরউদ্দিন মাহমুদ ও অমি নামের একজনের নাম উল্লেখসহ আরও চারজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।’
ওসি আরও বলেন, ‘এরই মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। মামলাটি গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হচ্ছে। আসামিদের ধরতে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’
এর আগে সাভারের বিরুলিয়ায় ‘ঢাকা বোট ক্লাবে’ ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে গতকাল রোববার রাতে রূপনগর থানা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন পরী মণি। রূপনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান সরদারের বার্তা নিয়ে অভিযোগটি আজ সোমবার দুপুরে সাভার মডেল থানায় পৌঁছে দেওয়া হলে মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়।
মামলায় জোর করে মদপান করানো, ভয়ভীতি প্রদর্শন, মারধর ও ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। ঢাকা জেলা উত্তরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবদুল্লাহিল কাফি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পরী মণির লিখিত অভিযোগটি রাজধানীর রূপনগর থানা পুলিশের মাধ্যমে আমাদের হাতে এসেছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগে পরী মণি উল্লেখ করেন, গত বুধবার দিবাগত রাতে অমি নামের এক বন্ধু ও জিমি নামের তাঁর ব্যক্তিগত রূপসজ্জাশিল্পীকে নিয়ে বিরুলিয়ায় ‘ঢাকা বোট ক্লাবে’ যান তিনি। সেখানে ছয়জন তাঁর শ্লীলতাহানি করেন। এক পর্যায়ে তাঁকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা করা হয়।
পরে বনানী থানায় অভিযোগ নিয়ে গেলে কোনো প্রতিকার না পাওয়ার অভিযোগ করেন পরী মণি। পরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই বিষয়টিসহ ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করেন তিনি।